ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উন্নত বিশ্বে ফুটওয়্যার রফতানিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৮
উন্নত বিশ্বে ফুটওয়্যার রফতানিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ ওয়ার্কশপে বক্তব্য রাখছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: তৈরি পোশাকের মতো উন্নত বিশ্বে বিশ্বমানের ফুটওয়্যার রফতানিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৬ জুন) ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)-এর উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও ফুটওয়্যারের উপর একটি বিশেষ ওয়ার্কশপে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাকের মতোই কম মূল্যে উন্নতমানের ফুটওয়্যার তৈরি ও রফতানি করতে সক্ষম আমরা।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বমানের ফুটওয়্যার তৈরি ও রফতানি শুরু করেছে। আমরা সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন দেশে রফতানি করছি। সংগত কারণেই বাংলাদেশে একের পর এক আধুনিক ও বিশ্বমানের ফুটওয়্যার কারখানা গড়ে উঠছে। এ সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগও আসছে। ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের মতো ফুটওয়্যার আমদানি করলে লাভবান হবেন।

তিনি বলেন, চামড়া বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রফতানি পণ্য। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি ফুটওয়্যারের বিপুল চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে তৈরি চামড়াজাত পণ্যের বেশ সুনাম রয়েছে। প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ উন্নতমানের চামড়া উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সুনামের সঙ্গে রফতানি করে আসছে উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ফুটওয়্যারের উন্নতমানের কাঁচামাল বাংলাদেশের নিজস্ব উৎপাদিত, আমদানি করতে হয় না। বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক দক্ষ জনশক্তি রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। ২০২৭ সাল থেকে চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির গতির চাকা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ রফতানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন রফতানি বাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আশা করছে উন্নত বিশ্ব বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সবকিছু করছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কারখানাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। ফায়ার ও ইলেক্ট্রিকাল সেফটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাজ করছে। বাংলাদেশে একের পর এক গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো এখন সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্স।
 
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক কারখানাগুলো অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে শিল্প মালিকদের নতুন করে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়েছে। ক্রেতাগোষ্ঠীর উচিত পণ্যের মূল্যের দিকে দৃষ্টি দেওয়া। যাতে কারখানার মালিকরা তৈরি পোশাকের উপযুক্ত মূল্য পান।

‘ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আইএলও এর সঙ্গে সাসটেইনিবিলিটি কম্প্যাক্ট করেছে। তিনটি পিলারের উপর এটি প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশ শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করেছে। বিল্ডিং-ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করার পাশাপাশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় পিলার তৈরি পোশাকের ন্যায্য মূল্যের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। এখন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সুপারিশ গ্রহণ এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ’
 
বাংলাদেশে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু এ ওয়ার্কশপে বক্তব্য রাখেন।

এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম, বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল মো. হাবিবুর রহমান খান এবং ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৮
আরএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।