ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রোজার আগেই বেড়েছে পণ্যের দাম, উদ্বেগ সাধারণ নাগরিকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৯
রোজার আগেই বেড়েছে পণ্যের দাম, উদ্বেগ সাধারণ নাগরিকদের বাজার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চাহিদার তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য অনেক বেশি মজুত রয়েছে। তাই রোজায় পণ্যের দাম বাড়বে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এমন আশ্বাসের পরও স্বস্তি মেলেনি সাধারণ মানুষের জীবনে। সবকিছু ছাপিয়ে সাধারণ নাগরিকদের জন্য উদ্বেগ হয়ে দেখা দিয়েছে রোজায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজার ঘুরে মিলেছে এমন চিত্রই।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, রোজা শুরু হওয়ার আগে থেকে বেড়ে গেছে বেশিরভাগ পণ্যের বাজারদর।

আর রোজা শুরুর পর গত দু’দিনেও কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে নতুন করে। রোজায় বাজারদর স্থিতিশীল রাখার জন্য পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিশেষ তদারকি দলসহ জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করলেও ভোক্তারা এর সুফল পাচ্ছেন না। প্রায় সব সবজির দামই এখন আকাশছোঁয়া। কিছু সবজির কেজি ছুঁয়েছে ১০০ টাকা, বাকিগুলোর বেশিরভাগই কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা।

প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭৫ টাকায়, যা কয়েকদিন আগেও ছিল ১৫৫ টাকা। বেড়েছে দেশি ও অন্যান্য মুরগির দামও। গত এক মাসে গরুর মাংসের দাম ৫০ থেকে ৭০ টাকা বেড়ে এখন কেজিপ্রতি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭৫০-৮০০ টাকায়। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ। খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে। বেড়ে গেছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, বিভিন্ন ধরনের ডাল ও মসলার দামও।

রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে এখন দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ২২ থেকে ৩৫ টাকা, দেশি রসুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানি করা রসুন ১০০ থেকে ১১৫ টাকা, ছোলা ৭৫ থেকে ৯০ টাকা, ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ১০০ থেকে ১১২ টাকা, প্যাকেট আটা ৩৪ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু রোজা শুরু হওয়ার সপ্তাহখানকে আগেও দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ২০ থেকে ২২ টাকা, দেশি রসুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, আমদানি করা রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ছোলা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ৯৫ থেকে ১০৩ টাকা, প্যাকেট আটা ৩২ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হয়।

এছাড়া টিসিবির হিসেবে গত দেড় মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ২২ দশমিক ২২ শতাংশ, রসুন ২০ শতাংশ, ছোলা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, প্যাকেট আটা ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ দাম বেড়েছে। এছাড়া গরুর মাংসের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।

সকালে মুদি দোকান থেকে বিভিন্ন পণ্য ক্রয়কারী কারওয়ানবাজারের বাসিন্দা নাজিবুল হক বাংলানিউজকে জানান, রোজায় খাদ্য ও ভোগ্য নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে সাধারণ নাগরিকদের বেশিরভাগেরই হাঁসফাঁস পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। ব্যবসায়ীরা এখন রমজানের আগেই বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। এ কারণে রমজানের প্রায় সপ্তাহ বাকি থাকতেই বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। যাতে রমজানের সময় এটা নিয়ে ভোক্তারা নতুন করে বলতে না পারেন।

আর বিক্রেতাদের দাবি, খাদ্যপণ্য ও নিত্যপণ্যের এই মূল্যবৃদ্ধি শুধু রাজধানী ঢাকা বা বিভাগীয় শহরগুলোতে সীমাবদ্ধ নয়, জেলা শহরগুলোতেও প্রায় একই অবস্থা। স্থানীয় পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির কারণেই ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত পয়সা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৮ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৯
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।