ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১৮০ টাকার নাশপাতি রমজানে ৪৫০

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৬ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৯
১৮০ টাকার নাশপাতি রমজানে ৪৫০ নাশপাতি, ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: রমজানে বিশ্বের অনেক দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যছাড়ের হিড়িক পড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা অন্যান্য মাসে লাভ করলেও এ সময়টায় দিতে চান শুধু সেবা। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান পুরো বিপরীত। রমজানে বাংলাদেশে পাল্টা পণ্যে দাম বাড়ানোর হিড়িক পড়ে। অধিকাংশ পণ্যের সঙ্গে সেই হিড়িক পড়ে গিয়ে ফলের বাজারেও। 

বর্তমানে প্রায় সব ফলের দামে আগুন। বেড়ে কোনো কোনো ফলের দাম প্রায় দ্বিগুণ।

আবার প্রায় তিনগুণও হয়েছে কয়েকটি ফলের দাম। ইফতারের গুরুত্বপূর্ণ পদ নাশপাতিতে দামটা এমনই দেখা গেলো। রমজানকে কেন্দ্র করে বর্তমানে ১৮০ টাকার নাশপাতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি ধরে।

রমজানের আগে চীন থেকে আসা এক কেজি নাশপাতির দাম ছিল ১৮০ টাকা। অথচ রমজান আসার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে এই নাশপাতিই কেজি ৪৫০ টাকা। শনিবার (১১ মে) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর গোল চত্বরের ফলের দোকানে ৪৫০ টাকা দরেই বিক্রি হতে দেখা গেছে নাশপাতির।

কয়েকদিনের ব্যবধানে নাশপাতির দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে, মিরপুরের ফল বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রমজানের আগে নাশপাতির কেজি ছিল ১৮০ টাকা। এখন ৪৫০ টাকা। আমাদের কিছু করার নেই। আমরা মোকাম থেকে কিনে বেচি। এছাড়া সব ফলের দামই বাড়তি।

মিরপুর, কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ফল। প্রতি কেজি আপেল এখন ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ রমজানের আগে ১৬০ টাকা দরে ফলটি বিক্রি হয়েছে। একইভাবে প্রতি কেজি কমলা ১০০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি লাল আঙুর ৫০০ ও সাদা আঙুর ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মাল্টা ১৮০, পেয়ারা ১০০, বেদানা ২৮০ ও আম ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সর্বনিম্ন প্রতি কেজি দাপাস খেজুর ২৫০ ও সর্বোচ্চ কামরাঙা খেজুর দুই হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজান উপলক্ষে সব ধরনের ফলের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় ফল কিনতে ক্রেতারা অস্বস্তিতে। নাশপাতি কিনছেন এক ব্যক্তি, ছবি: জিএম মুজিবুর
মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে কথা হয় ফল কিনতে আসা আসাদুল হকের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগে ১২০ টাকা দরে আপেল কিনেছি। সেই আপেলের দাম এখন ২২০ টাকা। রমজানে রাতারাতি দাম বেড়ে গেছে অনেক ফলের।

ঢাকার পাইকারি ফলের আড়ত পুরান ঢাকার বাদামতলী ঘাটে। দেশের নানা এলাকা ছাড়াও দেশের বাইরে থেকে ফল আসে এখানে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী পাইকারির এই বাদামতলী ঘাটেও ফলের বাজারে আগুন।

পাইকারি ফল বিক্রেতাদের দাবি, বিগত পাঁচ মাসে অধিকাংশ ফল বিক্রেতা লোকসান করেছেন। যে দামে বিদেশ থেকে ফল আমদানি করা হয়েছে, সে দামে বিক্রি করতে পারেননি তারা। রমজানেও লোকসানের বোঝা গুনতে হতে পারে সেই ভয়ে ফল আমদানি কম করছেন পাইকাররা। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ফলের দাম বাড়তি।

পাইকারি ফল বিক্রেতা ও সবুজ এন্টারপ্রাইজের পরিচালক ফয়েজ আহমেদ সবুজ বাংলানিউজকে বলেন, বিগত পাঁচ মাস ধরে ফল বেচাকেনায় লোকসান গুনেছেন বিক্রেতারা। সেই ভয়ে অনেক পাইকার ফল আমদানি কম করছেন। দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় ফল আমদানি কম হয়েছে। যে কারণে রমজানে ফলের দামও বাড়তি।

নাশপাতির দাম এতো বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে সবুজ বলেন, নাশপাতির দাম চীনের স্থানীয় বাজারেই চড়া। চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশে ১০ শতাংশও নেই ফলটি। ফলে নাশপাতির দামটা আকাশচুম্বী।

আরও পড়ুন>> ১০০ লিচুর দাম ৮০০ টাকা!

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৯
এমআইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।