ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সবজির দাম কিছু কমলেও চড়া নিত্যপণ্যে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
সবজির দাম কিছু কমলেও চড়া নিত্যপণ্যে সবজির দাম কিছু কমলেও চড়া অন্যান্য নিত্যপণ্যে। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রমজানে রাজধানীর বাজারগুলোতে নতুন করে কোনো পণ্যের দাম না বাড়লেও আগের চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ পণ্য। তবে সবজির মধ্যে পটল, ঢেঁড়স, কাঁকরোল, করলা, ঝিঙ্গা, কচুরলতি, চিচিঙ্গার দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। 

পুরানো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, চিনি, মাছ ও মাংস। তবে অপরিবতিত রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদিপণ্যের দাম।

রোববার (১৩ মে) রাজধানীর সূত্রাপুর, ধূপখোলা মাঠ, দয়াগঞ্জ, গোপীবাগ, সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই মিলেছে।  

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন এসে কিছু সবজির দাম গত সপ্তাহ থেকে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে।  দাম কমা সবজির মধ্যে মান ও বাজার ভেদে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যা আগে ছিল ৬০ টাকা, কচুরলতি ৪০ টাকা,  আগে তা বিক্রি হতো ৬০ টাকা,  করলা ৫০ টাকা,  আগে ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, আগে ছিল ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা আগে ছিল ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা আগে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়।  

গত সপ্তাহে ৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া ধুন্দল এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া ঝিঙা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। যা  আগের সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় কিনতে হয় ক্রেতাদের।  

আগের মতই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। প্রতিকেজি পেঁপে ৬০ টাকা, শশা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লেবু হালি মান ভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকা।  

দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে সজনে ডাটা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, লাউ প্রতি পিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি আঁটি লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ১০ থেকে ২০ টাকা, পুঁই শাক ও ডাটা শাক ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি ব্যবসায়ী আল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, গত সপ্তাহ থেকে আজকে সবজির দাম কম। রোজার শুরুর আগে কম বেশি সব জিনিসের দাম বাড়ারে। তবে বাজারে এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ভালো আছে। ফলে দাম কমেছে।  

‘তবে সব সবজির দাম কমেনি। যেগুলোর চাহিদা বেশি সেসব সবজির দাম আগের মতই আছে। কিছু দিনের মধ্যে সবজির বাজার স্বাভাবিক হয় যাবে। নতুন সবজি আসলে এমনিতেই দাম কমে যাবে। ’

এদিকে বাজারগুলোতে নতুন নির্ধারিত দাম অনুযায়ী দেশি গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫২৫ টাকা এবং বিদেশি বা বোল্ডার গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা ও মহিষের মাংস কেজি প্রতি ৪৮০ টাকায় বিক্রির জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগীর মাংস প্রতি কেজি বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫০ টাকা।

পহেলা রমজান থেকে ২৬ রমজান পর্যন্ত মাংসের এ দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সকালে অভিযানের ‘ভয়ে’ এ দামে বিক্রি হলেও বিকেলে ২০ থেকে ৭৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আগের সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি সকালে ১৩০- ৪০ টাকা থাকলেও বিকেলে তা ১৫০-১৫৫ টাকায় কিনতে হয় ক্রেতাদের।

মাংস ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে আমরা গরুর মাংস ৫৫০ টাকায় কেজি বিক্রি করেছি। এখন সরকার ৫২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।  

ফলে আমাদের লাভ কম হয়। এজন্য সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ দামে বিক্রি করলেও বিকেলে ৫৫০ টাকায় বিক্রি করি। সকালে মোবাইল কোর্টের কারণে বিক্রি করতে পারি না।

এছাড়া ভালোমানের বাজার ও সময় ভেদে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, আর কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। তবে বেড়েছে রসুনের দাম। গত সপ্তাহে রসুন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আগের দামেই বিক্রি  হচ্ছে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫৮  থেকে ৬০ টাকায়। মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮ বিক্রি হতে দেখা গেছে ৩৮ টাকা দরে ।  

এছাড়া খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। প্রতি কেজি খোলা আটা ২৭ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, খোলা ময়দা ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, খেসারি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, বুট ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন ক্রেতারা।

টানা দুই সপ্তাহ দাম কমার পর ডিমের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ৮০-৮৫ টাকায়। মুদি দোকানে ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ৭-৮ টাকায়।

ডিমের পাশাপাশি অপরিবতির্ত বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম। রুই কাতলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০, আইড় ৮০০ টাকা, মেনি মাছ  ৫০০, বেলে মাছ প্রকার ভেদে ৭০০ টাকা, বাইম মাছ ৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, পুঁটি ২৫০ টাকা, পোয়া ৬০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, পাবদা  ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং ৮০০, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।

মাছ ব্যবসায়ী সুমন পোদ্দার বাংলানিউজকে  বলেন, কয়েক মাস ধরেই মাছের দাম চড়া। এবার মাছের দাম সহসা কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। কারণ এবার বৃষ্টি খুব একটা হয়নি। যদি বৃষ্টি অথবা বন্যা হয় তাহলে হয়তো মাছের দাম কিছুটা কমতে পারে। আর এ মৌসুমে সবসময়ই মাছের দাম চড়া থাকে।

পবিত্র রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল খুলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দেশের যে কোনো স্থানের মূল্য বৃদ্ধির তথ্য সেলকে দেওয়ার জন্য ৯৫৪৯১৩৩, ০১৭১২-১৬৮৯১৭,৯৫১৫৩৪৪ ও ০১৯৮৭-৭৮৭২০৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।  

পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাভুক্ত বাজারগুলোতে বসানো হবে ডিজিটাল মূল্য তালিকার বোর্ড।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
জিসিজি/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।