ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দ. কোরীয় বাস মেরামতে মিললো ৪ লাখ ডলার অনুদান

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৯
দ. কোরীয় বাস মেরামতে মিললো ৪ লাখ ডলার অনুদান

ঢাকা: বাংলাদেশের কাছে ২০১৩ সালে ৩০০টি সিএনজিচালিত বাস বিক্রি করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। দাইয়ু কোম্পানির বাসগুলোর অর্থনেতিক আয়ুষ্কাল বলা হয়েছিল ১৫ বছর। অথচ ছয় বছর না হতেই বেশিরভাগ বাস লক্কড়-ঝক্কড় হয়ে পড়েছে। তাই এই বাস মেরামতে বাংলাদেশ সরকারকে চার লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা) অনুদান দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ)।

‘প্রকিউরমেন্ট অব ৩০০ সিঙ্গেল ডেকার সিএনজি বাস’ প্রকল্পের আওতায় ইডিসিএফের দেওয়া এই অনুদান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে ইতোমধ্যেই হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। এমনকি সেই অর্থে বাসগুলো মেরামতের কাজও শুরু হয়ে গেছে।

ইআরডি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিআরটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসা ৫২ আসনের ৩০০ দাইয়ু বাসের মধ্যে ১৫০টি এসি ও ১৫০টি নন-এসি। এর মধ্যে আটটি একেবারেই মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চারটি পুড়েছে রাজনৈতিক আগুনে। বাকি সব বাসেরই লক্কড়-ঝক্কড় অবস্থা। কিছু বাস ঢাকা-গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিআরটিসি ডিপোতে রেখে একদিন মেরামত করে দু’দিন চালানো হয়। তবে ১৪১টি বাসের জরুরি মেরামত প্রয়োজন ছিল। এক্ষেত্রে বিআরটিসি হিমশিম খাচ্ছিলো বিধায় তারা দ্বারস্থ হয় দক্ষিণ কোরিয়ারই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইডিসিএফের। আর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনুদানের হাত বাড়িয়েছে দিয়েছে দক্ষিণ কোরীয় সংস্থাটি।  

তারা যে অনুদান দিয়েছে তাতে এখন ৪০টি বাসের মেরামত চলছে। নিজস্ব অর্থায়নে মেরামত চলছে আরও ২০টির। আরও ৮১টি বাসের মেরামত জরুরি।

বিআরটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, গড়ে প্রতিটি বাস মেরামতে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। সেজন্য মেরামত কাজের জন্য আরও ৩০ লাখ ডলার অনুদান চেয়েছে বিআরটিসি।  

ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, অনুদানের সঙ্গে ইডিসিএফের শর্তও রয়েছে। তা হলো মেরামতের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ দাইয়ু থেকেই কিনতে হবে। যদিও দেশীয় বাজারে দাইয়ু বাসের খুচরা যন্ত্রাংশ সহজলভ্য নয়, এমনকি অনেক যন্ত্রাংশ পাওয়াও যায় না। অন্য দেশ থেকে আমদানি করাও ব্যয়বহুল।
 
অনুদানের পাশাপাশি বিআরটিসির সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণও দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। চারজন প্রশিক্ষক বাস মেরামতসহ সড়কে গাড়ি চালানোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিলেও কোনো ভাতা-সম্মানি নেননি।

জানা যায়, ২০১৩ সালে ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাসগুলো কিনতে ২০৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। এ বাস কেনার জন্য ঋণচুক্তি হয় তারও আগে ২০১০ সালের জুলাইয়ে। ঋণের সার্ভিস চার্জ ধরা হয় ০ দশমিক ১ শতাংশ। ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে ঋণ পরিশোধযোগ্য বলা হয় তখন। কিন্তু ঋণশোধের মেয়াদ, এমনকি অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পার না হতেই দুর্দশায় পড়েছে বাসগুলো।

এ বিষয়ে বিআরটিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া বাংলানউজকে বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া সহজ ঋণে আমাদের বাস সরবরাহ করেছিল। এখন বাসগুলো মেরামতেও চার লাখ ডলার অনুদান দিয়েছে। এই অনুদান ও সরকারি অর্থায়নে মোট ৬০টি বাস মেরামত করা হচ্ছে। কিছু বাস ইতোমধ্যে সড়কে চলাচলও করছে। আরও ৮১টি বাস মেরামত জরুরি। সেজন্য আরও ৩০ লাখ ডলার অনুদান চাওয়া হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে। অনুদান পেলে বাকি বাসগুলো মেরামত করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৯
এমআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।