ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শ্রমিক থেকে যেভাবে ফ্যাক্টরির মালিক সাইদুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯
শ্রমিক থেকে যেভাবে ফ্যাক্টরির মালিক সাইদুল সাইদুল ইসলাম। ছবি: বাংলানিউজ

পঞ্চগড়: অদম্য ইচ্ছা শক্তি, মনোবল, আশা, সততা আর সাধনা দিয়ে মানুষ কত কিছুই না করতে পারে! পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সাইদুল ইসলাম তেমনই একজন। ইচ্ছাশক্তি এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে আজ তিনি একটি কার্পেট ফ্যাক্টরির মালিক। যদিও পাঁচ বছর আগেও ঢাকার একটি কার্পেট ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন সাইদুল!

জীবিকার সন্ধানে প্রায় ৫ থেকে ৭ বছর আগে ঢাকার একটি কার্পেটের ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করেন তিনি। স্বপ্ন দেখেন নিজেই একটি ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করবেন।

যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। মনোবল শক্ত রেখে এবং শিল্পকে কাজে লাগিয়ে গ্রামের বাড়িতে তৈরি করেছেন নিজের কার্পেট ফ্যাক্টরি। এর নাম দিয়েছেন রং-বেরং কার্পেট ফ্যাক্টরি।

সাইদুল উপজেলার পানিহাকা গ্রামের বাসিন্দা।

সাইদুলের ফ্যাক্টরিতে বানানো কার্পেট।  ছবি: বাংলানিউজ

জানা যায়, ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন সাইদুল। অভাব অনটনের কারণে পড়ালেখা বেশি করা হয়নি। কাজের খোঁজে যান ঢাকায়। ঢাকায় কার্পেটের এক ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে করতে সাইদুল কাজগুলো শিখে নেন ভালো করে। পরে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ত্রিশ হাজার টাকা ঋণ নেন। ওই টাকা দিয়ে ২টা মেশিন কেনার পর নিজে বাড়িতে কার্পেটের কাজ শুরু করেন বছর দু’য়েক আগে। বর্তমানে তার কার্পেটের ফ্যাক্টরিতে প্রায় ২০টি মেশিন রয়েছে। কাজ করছেন ১৫ থেকে ২০ জন।

পানিহাকা গ্রামের কার্পেট শ্রমিক আশরাফ আলী ও রিপন বাংলানিউজকে জানান, গ্রামে ফ্যাক্টরিটি চালু হওয়ায় এখানে কাজ করে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ শত টাকা রোজগার করা যাচ্ছে। এরকম আরও কার্পেট ফ্যাক্টরি হলে অনেক বেকার ও গরিব মানুষ কাজ করতে পারবে।

এ ফ্যাক্টরিতে নিয়মিত কাজ করেন প্রায় ২০জন শ্রমিক।  ছবি: বাংলানিউজ

নারী শ্রমিক আসমা ও শাপলা জানান, এ আয়ের টাকা দিয়ে ছেলে মেয়ের পড়ালেখাসহ সংসারের প্রয়োজনে খরচ করা সম্ভব হচ্ছে। বাড়ির কাছে এরকম একটা ফ্যাক্টরি হওয়ায় অনেকের কাজ করতে সুবিধা হয়েছে।

এলাকায় কিছুটা হলেও বেকার সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে রং-বেরং কার্পেট ফ্যাক্টরি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি বা বেসরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে রং-বেরং এর মালিক সাইদুল প্রতিষ্ঠানটিকে আরও বড় আকার দিতে পারবেন।

ফ্যাক্টরির মালিক সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমার উৎপাদিত পণ্যের মান খুবই ভালো। বর্তমানে এগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। সরকারি বা বেসরকারিভাবে ঋণ সহযোগিতা পেলে আমি আমার ফ্যাক্টরির কলেবর বাড়াবো।

সাইদুল একসময় নিজেই ছিলেন কার্পেট ফ্যাক্টরির শ্রমিক।  ছবি: বাংলানিউজ

পঞ্চগড় জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন বাংলানিউজকে জানান, ক্ষুদ্র পরিসরে নির্মিত রং-বেরং কার্পেট ফ্যাক্টরির উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান খুবই ভালো। ইতোমধ্যে জেলার সার্কিট হাউজে পঞ্চগড় ব্রান্ডিংয়ে এ স্থান পেয়েছে রং-বেরং এর উৎপাদিত পণ্য। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটক সার্কিট হাউজের পঞ্চগড় ব্রান্ডিং এ পঞ্চগড়ের উৎপাদিত পণ্য কম মূল্যে কিনতে পারছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।