ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পেঁয়াজের দাম কমে ২০০ টাকার নিচে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
পেঁয়াজের দাম কমে ২০০ টাকার নিচে

ঢাকা: গত কয়েক মাস ধরেই দেশের বাজারে পেঁয়াজ সংকট চলছে। অবস্থা ‘নাগালের’ বাইরে যাওয়ায় সরকার তুরস্ক, মিশর, মিয়ানমারসহ কয়েকটি দেশ থেকে পণ্যটি আমদানি শুরু করে। পাইপলাইনে রয়েছে আরো পেঁয়াজ। এতোকিছুর পরও নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম উল্টো বেড়ে প্রায় তিনশ টাকার কাছাকাছি চলে যায়।

এ অবস্থায় বেশি লাভের আশায় বাজারে অপরিপক্ক (গাছসহ ছোট কাঁচা পেঁয়াজ) পেঁয়াজ আনছেন কৃষক। নতুন এ পেঁয়াজের চাহিদা থাকায় বিক্রি কমে যায় পুরনো পেঁয়াজের।

মূলত এরপরই দাম কমতে থাকে পেঁয়াজের।
  
আর তাতে দুই দিনের ব্যবধানে ২৭০ টাকা থেকে কমে বর্তমানে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। আমদানি করা তুরস্ক-মিশরের পেঁয়াজ ২০০ টাকা থেকে কমে বর্তমানে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। পাইকারি বাজারেও কমেছে পেঁয়াজের দর।  

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা, আমদানি করা মিশর ও তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া গাছসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।

এদিকে গত দুই দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দর কমেছে ১২০ টাকা। সোমবার (১৮ নভেম্বর) পাইকারি বাজারখ্যাত শ্যামবাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও মঙ্গলবার আরও ৬০ টাকা কমে যায় কেজিপ্রতি। বর্তমানে শ্যামবাজারে পাইকারি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। আর আমদানি করা (মিশর-তুরস্ক) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।

হঠাৎ পেঁয়াজের দর বৃদ্ধি আবার দুই দিনের মধ্যে দাম কমা নিয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে। ক্রেতারা বলছেন, গাছসহ দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসায়, লোকসানের ভয়ে বিক্রেতারা কম দামেই ছেড়ে দিচ্ছেন পেঁয়াজ। আর বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে এটাই স্বাভাবিক। এখন বাজারে পেঁয়াজ আসা শুরু করেছে তাই দামও কমছে।

লাবনি তাবাচ্ছুম নামে রামপুরা কাঁচাবাজারের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজের দাম অনেক কমেছে, আরও কমবে। এজন্য কৃষকদের ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, কৃষক গাছসহ বাজারে পেঁয়াজ না আনলে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা আরও দাম বাড়িয়ে দিতো। বাজারে আগের মতোই পেঁয়াজ আছে, দাম কমার কারণ নেই। তবে গাছসহ পেঁয়াজ আশায় দাম কমলো। এজন্য কৃষকরা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য, তারাই কমিয়েছেন দাম।

লাবনির কথার সঙ্গে একমত না সেগুনবাগিচা বাজারের খুচরা বিক্রেতা এনায়েত। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পাইকারি বাজারে বেশি সরবরাহ আছে, তাই দাম কমেছে, আমরাও কম দামেই বিক্রি করছি।
এ বিষয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারক ও আড়তদার শংকর চন্দ্র ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, গাছসহ বাজারে পেঁয়াজ আসায় দাম কমেছে এমনটা না। সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমে আসছে। কার্গো প্লেনযোগে পেঁয়াজ আসছে এটা বাজারে এলে আরও দাম কমে আসবে, এগুলো না এলে হয়তো উল্টো চিত্র হতে পারতো।

অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় অব্যাহত রয়েছে টিসিবির খোলা বাজারে ট্রাকসেলে পেঁয়াজ বিক্রি। দীর্ঘ সময় ধরে সারিবদ্ধ লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের।

এ বিষয়ে টিসিবির ডিলার রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারিভাবে ট্রাক সেলে বিক্রি চলছে অনেক আগে থেকেই। আমরা সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন পেঁয়াজ বিক্রি করছি। প্রতিদিন একেকটি ট্রাকযোগে এক হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছি। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বিক্রি অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
ইএআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।