ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংক বিলুপ্ত হলে ছয় মাসের মধ্যে টাকা ফেরত পাবেন গ্রাহক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
ব্যাংক বিলুপ্ত হলে ছয় মাসের মধ্যে টাকা ফেরত পাবেন গ্রাহক

ঢাকা: দেশের কোনো ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন (বিলুপ্ত) হলে ছয় মাসের মধ্যে গ্রাহকের অর্থ আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল থেকে এক লাখ টাকা পরিশোধ করা হবে। বাকি অর্থ বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠানের সম্পদ বিক্রি করে দেওয়া হবে।  

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে তফসিলি ব্যাংকের মতো নন-ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

সে কারণে ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন-২০০০’ সংশোধন করে ‘আমানত সুরক্ষা আইন-২০২০’ তৈরি করা করা হয়েছে, যা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন।  

প্রস্তাবিত ‘আমানত সুরক্ষা আইন-২০২০’- এ কভারেজের পরিমাণ সময়ে সময়ে বৃদ্ধি/নির্ধারণ করার ক্ষমতা ট্রাস্টি বোর্ড তথা বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রদান করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিদ্যমান আইনে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক কোনো তফসিলি ব্যাংক অবসায়িত ঘোষণা করা হলে অনধিক একশত আশি দিনের মধ্যে আমানতকারীদের প্রাপ্য টাকা আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল হতে পরিশোধ করা হবে।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, এছাড়া বর্তমান বীমা তহবিলে সংরক্ষিত টাকার পরিমাণ অনুযায়ী ৯২% আমানতকারীর হিসাব সম্পূর্ণ বীমাকৃত। এর বাইরেও, ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১’- এর ৭৪ ধারা অনুসারে, কোনো তফসিলি ব্যাংক অবসায়িত হলে উক্ত ব্যাংকের সম্পদ হতে সকল আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমানত সুরক্ষা আইন-২০২০’ প্রবর্তনের পর ধারা ৭ অনুসারে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীরাও এ অধিকার প্রাপ্য হবেন। তাছাড়া প্রস্তাবিত আইন মোতাবেক কভারেজের পরিমাণ দ্বিগুণ করা সম্ভব হলে প্রায় ৯৬% আমানতকারী সম্পূর্ণ বীমাকৃত হবে।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, উপরন্তু আমানত সুরক্ষা ট্রাষ্ট তহবিলের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সরকারি ট্রেজারি বন্ড খাতে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে এবং উক্ত বিনিয়োগ হতে প্রাপ্ত মুনাফা ও তফসিলি ব্যাংকসমূহ কর্তৃক প্রদত্ত প্রিমিয়ামের মাধ্যমে তহবিলের অর্থ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ভবিষ্যতে শুধুমাত্র এই তহবিল হতেই শতভাগ আমানতকারীর আমানত বীমার আওতায় আসবে বলে আশা করা যায়।  

ব্যাংক কোম্পানি আইনের পাশাপাশি আমানত বীমা আইন বাংলাদেশ সরকারের একটি পৃথক নিরাপত্তা বলয় অর্থাৎ আমানতকারীদের বীমাকৃত অর্থ প্রদানের পৃথক ব্যবস্থা যা আমানতকারীদের আমানত সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

প্রস্তাবিত ‘আমানত সুরক্ষা আইন-২০২০’-এ তফসিলি ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকেও আমানত সুরক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে এ আইন বলবৎ হলে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীগণও সুরক্ষিত হবেন।

সবশেষ ২০০০ সালে ব্যাংক আমানত বীমা আইন-২০০০ প্রবর্তন করা হয়। ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন-২০০০’-এ আমানতকারীদের স্বার্থ আরও সুরক্ষিত করতে কভারেজের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এক লাখ টাকা ধার্য্য করা হয়।

‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০’এ একজন আমানতকারীর জন্য ইন্স্যুরেন্স কভারেজের পরিমাণ নির্ধারিত থাকলেও কভারেজের পরিমাণ বৃদ্ধি করার কোনো সুযোগ ছিল না।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিকেশন ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক জিএম আবুল কালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।