ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চালু কারখানা: শঙ্কার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কাজ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২০
চালু কারখানা: শঙ্কার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কাজ

ঢাকা: ময়না (ছদ্মনাম) রাজধানীর জুরাইনের একটি টেক্সটাইল কারখানায় কর্মরত। সারা দেশ যখন করোনার ভয়াল থাবায় তখনও সরকারের সাধারণ ছুটির মধ্যে থেমে নেই তাদের কাজ। প্রতিদিন তাকে তার কর্মস্থলে যেতে হয়। কাজ করছেন, বেতন পাচ্ছেন নিয়মিত।

করোনা ভাইরাসের মধ্যে কমতি নেই তাদের কারখানায় স্বাস্থ্যবিধির। হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার-মাস্কের ব্যবহার, জীবাণুনাশক ব্যবহার করে কর্মস্থল জীবাণুমুক্ত করা হয় সর্বদা।

তার কারখানা বা বাসার আশপাশে কেউ আক্রান্ত না হলেও শঙ্কা তৈরি হয় মাঝে-মধ্যে। না জানি কখন করোনা নামক যমদূত হানা দেয়।

আরও পড়ুন>>সাধারণ ছুটি বাড়লো ১৬ মে পর্যন্ত

কথা হয় ময়নার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কারখানায় (নেক্সট জেন টেক্সটাইল) কাজের অর্ডার আছে, তাই কাজ করতে হচ্ছে। মালিপক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী রেখেছেন যারা আমাদের থার্মাল দিয়ে তাপমাত্রা দেখেন। প্রবেশের আগে ও পরে নানা পরামর্শ দেন। কারখানায় এলে ভালো লাগে এ ভেবে যে, সব রকম পরীক্ষা থাকায় হয়তো করোনায় আক্রান্ত হবো না। তবে শঙ্কাও তৈরি হয় কারণ প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অফিস খোলা, পরিবার-সংসার-সন্তান নিয়ে চিন্তাও হয়। কী হচ্ছে, কী হবে এটা ভেবে। একই কথা বলেন, শ্যামপুর এলাকার নিউ জেনারেল গার্মেন্টসকর্মী শাহিনা।

মতিঝিল এলাকার একটি অ্যাপারেলে কাজ করেন শাহিন বাবু। তিনি বলেন,  এ অবস্থায় যতই সুরক্ষা দেয়া হোক বাজারেতো যাওয়া হয়। আবার আসা-যাওয়ার মধ্যেও কেউ আক্রান্ত হতে পারেন  তাই কারখানা বন্ধ রাখায় ভালো। পরিবেশ ভালো হলে আবার চালু করা যেত। কারণ একজন আক্রান্ত হলে অন্যরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

এদিকে যেসব কারখানায় কাজ আছে সেসব কারখানা সরকারের স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ মেনে ধাপে ধাপে চালু হয়েছে। প্রথম ধাপে ঢাকা মেট্টোর মধ্যে কয়েকটি কারখানা গত রোববার (২৬ এপ্রিল) থেকে চালু হয়েছে। যেগুলো ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিক দিয়েই চালানো হচ্ছে। এরপর ঢাকার বাইরের কারখানা চালু হলেও গ্রামে থাকা শ্রমিকদের ঢাকায় আসতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। শুধু কারখানা এলাকায় অবস্থান করা শ্রমিক দিয়ে সেগুলো চালানো হচ্ছে।

চালু হওয়া কারখানায় শ্রমিক প্রবেশের আগে ও পরে মাপা হচ্ছে তাপমাত্রা। দেয়া হচ্ছে মাস্ক ও পোশাক। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে হাত ধোয়া। একটু পর পর ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। আর স্বাস্থ্যগত অবস্থা দেখতে নিয়মিত কারখানা পরিদর্শন করছেন বিজিএমইএ'র পরিদর্শন টিমের সদস্যরা। পাশাপাশি কোনো শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হলে তার দায়িত্ব বিজিএমইএ নেবে বলে এর আগে গণমাধ্যমকে জানান বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক।

আরও পড়ুন>>>শর্ত দিয়ে দোকানপাট-শপিংমল খোলার অনুমতি

এ বিষয়ে বাংলাদেশে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনের মতো অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের অনেক অর্ডার বাতিল হয়েছে। এখন আমরা কয়েকটি ধাপে কারখানাগুলো চালু করেছি। শুধু যারা কারখানা এলাকায় আছেন এমন শ্রমিক দিয়ে কারখানা চালু হয়েছে। কোনো শ্রমিক এ মুহূর্তে গ্রামে অবস্থান করলে সে সেখানে থাকবে, আমাদের পক্ষ থেকে আপাতত ঢাকায় আসতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে তার বেতন বিকাশের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। পরে এসে তিনি কাজে আবার যোগদান করবেন। চাকরি চলে যাবে না। আমরা কারখানা চালু করেছি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২০
ইএআর/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।