ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রপ্তানিতে চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে পাট খাত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
রপ্তানিতে চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে পাট খাত

ঢাকা: প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে পাট খাত চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৭৯ কোটি ১৩ লাখ ডলার আয় করেছে। এই অংক গত বছরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি।

রোববার (১৭ মে) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনা ভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ দপ্তর ও সংস্থাসমূহের কার্যক্রম পর্যালোচনা সভায় এ কথা জানানো হয়।

বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজদ, আবু বকরসহ এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা বিবেচনায় পাট চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি পাট শিল্প সম্প্রসারণে সরকার সবধরনের সহায়তা করবে। পাটের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, পাট ক্রয়-বিক্রয় সহজীকরণের জন্য এসএমএস ভিত্তিক পাট ক্রয়-বিক্রয় ব্যবস্থাকরণ, কাচা পাট ও বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ, পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনা ও অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বৃদ্ধিকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।

সরকার মানসম্মত পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে পাট অধিদপ্তরের আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ র্শীষক প্রকল্পটি জুলাই, ২০১৮ হতে মার্চ ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাটচাষের উন্নত কলাকৌশল সর্ম্পকে চাষিরা প্রশিক্ষিত করা এবং সার্বিকভাবে গুণগত মানসম্মত পাট ও পাটবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের ৩৯০ মেট্রিক টন পাট বীজ বিনামূল্যে বিতরণসহ সবধরনের সহায়তা অব্যহত রয়েছে।

সভায় আরো জানানো হয়, করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির কারণে তাঁতিদের সম্ভাব্য ক্ষতির মূল্যায়ন এবং এই ক্ষতি উত্তরনে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। তাঁতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চলতি মূলধন সরবরাহ এবং তাঁতের আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় তাঁতিদের শতকরা ৫ ভাগে সুদে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ৩০০ ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক তাঁতিদের ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পসমূহ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পসমূহকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিনটি ভাগে ভাগ করে বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে, ২৬ এপ্রিল ২০২০ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত বিজেএমসির মিলগুলোতে ১৫৭৪ মেট্রকি টন পাট পণ্য উৎপাদিত হয়েছে যার মূল্য প্রায় ২৭.৪৫ কোটি টাকা। ২৬ মার্চ ২০২০ তারিখের পর থেকে এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে ৯৯৫২ মেট্রিক টন পাট পণ্যের বিক্রয় আদেশ জারি করা হয়েছে যার মূল্য ৭৪.২৩ কোটি টাকা এবং স্থানীয় বাজারে ৯১৪৮ মেট্রিক টন যার মূল্য ১১৫.৯৭ কোটি টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ১৯০ কোটি টাকার পাট পণ্যের বিক্রয় আদেশ জারি করা হয়েছে।

এছাড়া বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্প খাতকে আরও শক্তিশালী নিরাপদ ও প্রতিযোগিতা সক্ষম করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে৷ সরকারের এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য দেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্পের ‘পোষাক কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে বস্ত্র অধিদপ্তর ২৯৬ টন যন্ত্রপাতি-যন্ত্রাংশ ছাড়করণের সুপারিশ, চারটি আইপি জারির সুপারিশ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
জিসিজি/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।