ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খালিশপুর জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ, শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২০
খালিশপুর জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ, শ্রমিকদের বিক্ষোভ

খুলনা: করোনার প্রাদুর্ভাবে সাধারণ ছুটি চলাকালীন সময়ে মজুরি এবং উৎসব ভাতার দাবিতে উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকরা। সোমবার (১৮ মে) রাত সাড়ে ৮টায় মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা।

একই দাবিতে মঙ্গলবার (১৯ মে) ভোর ৬টা থেকে বিকেল পর্যন্ত শ্রমিকরা খালিশপুর বিআইডিসি সড়কের পিপলস গোলচত্বর থেকে কলোনি গেট পর্যন্ত অবরোধ করে রাখেন তারা। ফলে এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাবে খুলনায় বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও শ্রমিকরা রোজা রেখে বিক্ষোভ করেন।

মিল কর্তৃপক্ষ বলছে, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) দৈনিক বা বদলি শ্রমিকদের সাধারণ ছুটির টাকা দেবে না। খালিশপুর জুট মিলের সব শ্রমিক দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করেন।

খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিক হাফিজুর রহমান সুমন বলেন, সরকার সাধারণ ছুটি চলাকালীন সময়ে শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ করতে বলেছে। সেই অনুযায়ী অন্যান্য মিলগুলোতে শ্রমিকদের সাধারণ ছুটিকালীন ৫ সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ করলেও আমাদের করেনি। একই সঙ্গে ঈদ উৎসব ভাতা নিয়েও টালবাহানা করছে।

শ্রমিকরা জানায়, সোমবার প্ল্যাটিনাম, ক্রিসেন্ট জুট মিলে ৫ সপ্তাহর মজুরি এবং দৌলতপুর জুট মিলে এক সপ্তাহের পাওনা মজুরি দেওয়া হয়। এ খবর খালিশপুর জুট মিল শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন তারা। তারা মিলের সব বিভাগের কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিআইডিসি রোড, রেললাইনের ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। শ্রমিকরা পিপলস গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ এবং চারদিকের রাস্তা বন্ধ করে দেন।

খালিশপুর জুট মিলের সিবিএর সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. ইব্রাহিম জানান, মিল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি সোমবারের স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী মিলে মজুরি শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার রাত থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে সড়কে নামে।

খালিশপুর জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো. খলিলুর রহমান জানান, শ্রমিকরা সাধারণ ছুটি চলাকালীন মজুরি চেয়েছেন। বিজেএমসি থেকে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকরদের মজুরি দেয় না। কিন্তু শ্রমিকরা মজুরি চাইছেন।

তিনি জানান, ছুটি চলাকালীন সময়ে ইলেকট্রিকসহ মেইনটেনেন্সের জন্য ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক কাজ করেছিলেন। তাদের পাঁচ সপ্তাহের মজুরি ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এসেছে। অন্যদের আসেনি।

খলিলুর রহমান আরও বলেন, মিলে প্রায় ২ হাজার ২০০ শ্রমিক কাজ করেন। মিলের শ্রমিকদের উৎসব বোনাসের অর্থ বিজেএমসি থেকে ছাড় দিলেও সাধারণ ছুটিকালীন দেয়নি। মঙ্গলবার থেকে শ্রমিকদের বোনাস দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেয় রাত সাড়ে ৮ টায়। ১০ টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করে। বোনাস দেওয়ার বিষয়ে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তারা মানতে নারাজ।

মিলের সিবিএ সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরদার আলী আহমেদ জানান, গার্মেন্টস বেসরকারি। অথচ তারা সাধারণ ছুটিকালীন ৬০ শতাংশ মজুরি পাচ্ছে। আমাদেরতো সরকারি পাটকল। তাহলে কেন মজুরি দেবে না। মজুরির বিষয় ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২০
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।