ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাজধানীর মার্কেটগুলো ফাঁকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২০
রাজধানীর মার্কেটগুলো ফাঁকা

ঢাকা: ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তেও রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে আশানুরূপ বেচাকেনা নেই। অনেকটাই ক্রেতা সংকটে ভুগছেন বিক্রেতারা। গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশও বিক্রি নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) রাজধানীর মিরপুর-১, ২, ১০, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ১০ মে থেকে মার্কেট খুলেছি।

মার্কেটে দর্শনার্থী এলেও ক্রেতা অনেক কম। দিন শেষে বেচাকেনা হতাশ করছে আমাদের। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা মার্কেটমুখী হচ্ছেন না বলেও মনে করছেন তারা।

এ ব্যাপারে শেওড়াপাড়ার যুবরাজ প্লাজার আধুনিক ফ্যাশনের মালিক জামির হাসান রতন বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকান খুলছি। আগের চেয়ে মানুষের ভিড় ও বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে বাড়লেও আশানুরূপ হচ্ছে না। গত বছরের বিক্রির ২০ শতাংশও এ বছর করতে পারিনি। ঈদের বাকি আর মাত্র তিনদিন। এসময়ের মধ্যে তেমন কী বা বিক্রি হবে বুঝতে পারছি না।

দিন শেষে বেচাবিক্রি আমাদের হতাশ করছে বলে জানালেন মিরপুরের নান্নু মার্কেটের আল স্টার ফ্যাশন কর্নারের মালিক মাহমুদুল্লাহ।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে মার্কেট খোলার পর দুপুর পেরিয়ে গেলেও বেচা-বিক্রি একেবারেই নেই। আর মাত্র দুই ঘণ্টায় কতোইবা বিক্রি হবে। গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বিক্রি নেই বলে তিনি জানান।  

এদিকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন কবির হোসেন। তিনি বাচ্চার কাপড় কিনতে এসেছেন মিরপুর মার্কেটে। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে কবির বলেন, আমাদের বড় উৎসব হচ্ছে ঈদ। তাই উৎসব থেকে বাচ্চাদের বঞ্চিত করতে চাই না। এজন্য বাচ্চাদের ঈদের জামা-কাপড় কিনতে মার্কেটে এসেছি। যত দ্রুত সম্ভব কিনে বাড়ি ফিরবো। করোনার কারণে বাড়ির বড় কারও জন্য কোনো কিছু কিনছি না।  

তবে রাজধানীর প্রতিটি মার্কেটের প্রবেশ মুখেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা দেখা গেছে। শুধু তাই নয় প্রত্যেক দোকানিই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কাস্টমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে উৎসাহিত করছেন বিক্রেতারা। এছাড়া ক্রেতারা মার্কেটের প্রবেশ মুখ থেকেই হাত পরিষ্কার করেই মার্কেটে প্রবেশ করছেন। এছাড়া দোকানগুলোর ভেতরেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বার বার বলে সতর্ক করছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। আমরা সেটি মেনে চলছি এবং ক্রেতা সাধারণকেও সেটি মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এদিকে সরকার অনুমতি দিলেও শপিংমল থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ও যমুনা ফিউচার পার্ক খুলেনি। একইসঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমলও বন্ধ রয়েছে।

অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের বাজার করার জন্য শপিংমলে ভিড় বাড়বে। আর এ ভিড় থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।

গত ৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকানপাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় একঘণ্টা কমানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।

এতে আরো বলা হয়, রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।

বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২০
এসএমএকে/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।