ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শেষ দিনেও মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা জমেনি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
শেষ দিনেও মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা জমেনি

ঢাকা: ঈদকে সামনে রেখে শেষ দিনেও রাজধানীর মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা জমেনি। মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই। বিক্রি নেই বলে হতাশ ব্যবসায়ীরা। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ঈদের আগের দিনও আশানুরূপ বেচাকেনা নেই বলে জানিয়েছেন তারা।

শনিবার (২৪ মে) রাজধানীর মিরপুর-১, ২, ১০, ১১, ১৩, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া এলাকা ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।  

ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে গত ১০ মে থেকে মার্কেট খুলেছি।

মার্কেটে দর্শনার্থী এলেও ক্রেতা নেই। শেষ দিনের বেচাকেনাও হতাশ করেছে আমাদের। করোনা সংক্রমণ অধিকতর বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা মার্কেটমুখী হয়নি। এতে আমাদের ব্যবসায় ব্যাপক ধস নেমেছে।

সরকারের বিধি অনুযায়ী বিকেল ৪টায় দোকান বন্ধ করার কথা থাকলেও শেষ দিনে অধিকাংশ মার্কেটকেই এ নিয়ম মানতে দেখা যায়নি। শেষ মুহূর্তের ক্রেতা পেতে দোকান খুলে রেখেছেন বিক্রেতারা।

এ ব্যাপারে মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনে অবস্থিত তাবাসসুম ফ্যাশনের মালিক মো. জনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের আগের দিন হলেও মার্কেটে বেচাকেনা নেই। গত বছরের বিক্রির ১০ শতাংশও বেচাবিক্রি হয়নি এ কয়দিন। সরকারের বিধি অনুযায়ী প্রতিদিন বিকেল ৪টায় দোকান বন্ধ করেছি, তবে আজ শেষ দিন হওয়ায় কিছুটা দেরি করছি। এখনও শেষ মুহূর্তে দু-চারজন ক্রেতা আসতে পারেন।  

রমজানের প্রতিদিনই বেচাবিক্রি আমাদের হতাশ করেছে বলে জানালেন মিরপুরের ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডের মালিক মোহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের বেচাকেনা নেই। এমনি দিনেও এর চেয়ে বেশি বেচাকেনা করি আমরা। প্রতিবছর ঈদে ক্রেতাদের ভিড়ে হিমশিম খেতে হয়। আর এ বছর অনেকটাই ক্রেতাশূন্য।

রাজধানীর ফুটপাতেও বেচাবিক্রি একেবারেই নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনে ফুটপাতের দোকানি সুমন বাংলানিউজকে বলেন, আজ একেবারেই বেচাকেনা নেই। মানুষ সব ঢাকা ছেড়ে দিচ্ছে।  

এদিকে রাজধানীর প্রতিটি মার্কেটের প্রবেশ মুখেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক দোকানিই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কাস্টমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে উৎসাহিত করছেন বিক্রেতারা। এছাড়া ক্রেতারা মার্কেটের প্রবেশ মুখ থেকেই হাত পরিষ্কার করেই মার্কেটে প্রবেশ করছেন। দোকানগুলোর ভেতরেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বার বার বলে সতর্ক করছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। আমরা সেটি মেনে চলছি এবং ক্রেতা সাধারণকেও সেটি মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এদিকে সরকার অনুমতি দিলেও শপিংমল থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ও যমুনা ফিউচার পার্ক খুলেনি। একইসঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমলও বন্ধ রয়েছে।

অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের বাজার করার জন্য শপিংমলে ভিড় বাড়বে। আর এ ভিড় থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।

গত ৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকানপাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় একঘণ্টা কমানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।

এতে আরো বলা হয়, রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।

বড় শপিংমলের প্রবেশ মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০
এসএমএকে/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।