ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সবজি রপ্তানিতে বাধা পরিবহন, ব্যাপক চাহিদা বহির্বিশ্বে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৭ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২০
সবজি রপ্তানিতে বাধা পরিবহন, ব্যাপক চাহিদা বহির্বিশ্বে

ঢাকা: দেশের ফল ও সবজির চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে বহির্বিশ্বে। চাহিদা আসছে, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। সবজির পাশাপাশি ফলের মৌসুমে রপ্তানিকারকরা প্রস্তুত থাকছেন রপ্তানির জন্য। তবে বিশ্ববাজারে ফল ও সবজি রপ্তানির চাহিদা থাকলেও বাধ সাধছে পরিবহন সমস্যা।

উড়োজাহাজের ঠিকঠাক কার্গো ফ্লাইট চালু না থাকায় একমাত্র ভরসা যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ। তবে টানা দুই মাসের লকডাউনের কারণে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজও পাওয়া যাচ্ছে না।


রপ্তানিকারকরা বলছেন, সবশেষ গত সপ্তাহে কুয়েত থেকে আসা দুটি কার্গো উড়োজাহাজযোগে সবজি রপ্তানি হয়েছে। আর কোমো ফ্লাইট না থাকায় আবার কোনো ফ্লাইট আসার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। তাদের মতে, দেশে এখন ফলের ভরা মৌসুম। ফলের চাহিদা রয়েছে ইতালি, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো দেশে। ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও।

ইউরোপে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে প্রায় সাত টন পর্যন্ত কাঁচামরিচ রপ্তানি হতো। সবজির চাহিদা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। ফল ও সবজির চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থার ঘাটতি থাকায় বিশ্ব বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ। পরিবহন ব্যবস্থা বাড়লে রপ্তানির পরিমাণও বাড়বে বলে জানান রপ্তানিকারকরা।

ইপিবির তথ্য বলছে, নয় মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) মোট ৪৪টি দেশে সবজি রপ্তানি হয়েছে ১৪ কোটি ৬৭ লাখ ১৪ হাজার মার্কিন ডলার। যা টাকার অঙ্কে এক হাজার ২৫০ কোটি টাকার। সে হিসাবে প্রতি মাসে সবজি রপ্তানি হয়েছে এক কোটি ৬৩ লাখ কোটি ডলার বা ১৩৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকার। প্রতিদিন গড়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।

বিদায়ী বছরে মোট ১০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ সবজি রপ্তানি হলেও চলতি বছর রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ কোটি ডলারের। আর ৯ মাসে  (জুলাই থেকে মার্চ) রপ্তানির লক্ষ্য ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারের। সে হিসাবে মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি সবজি রপ্তানি হয়েছে। আর গত বছরের তুলনায় ৭৯ শতাংশ বেশি।

এ সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল তিন কোটি ১৫ লাখ ডলার। এরপরই আরব আমিরাত যেখানে রপ্তানি হয়েছিল এক কোটি ১৭ লাখ ডলার।

রপ্তানিকারক সমিতি বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাউড প্রডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, কার্গো ফ্লাইটের অভাবে রপ্তানি করা যাচ্ছে না সবজি। ফলের ভরা মৌসুমেও ইউরোপ ও মধ্যেপ্রাচ্যের বাজার ধরতে পারছি না। এ সময়ে আম, কাঁঠাল, লিচুসহ মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাহিদা সেখানে। কার্গো ফ্লাইট চালুর সক্ষমতা থাকলেও সেটা করা হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে যাত্রীবাহী প্লেনে পাঠানো হতো সবজি। সবশেষ গত সপ্তাহে কুয়েতে দু’টি কার্গো ফ্লাইটে সবজি রপ্তানি হয়েছে, আমরা প্রস্তুত আছি পরের ফ্লাইটের জন্য।

তারা বলছেন, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস কার্গো পরিচালনা করলে আমরা কেনো পারবো না। আমাদের কার্গো না থাকায় রপ্তানির চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। এর মধ্যে বাড়ছে বাজার প্রতি্যোগিতা। অন্য দেশের দখলে চলে যাচ্ছে বাজার।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাউড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, চাহিদা বেশি থাকলে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার টন শাক-সবজি ও ফলমূল রপ্তানি হয় বিশ্ববাজারে। এখন সম্পূর্ণই বন্ধ আছে, কোনো দেশ থেকে কার্গো এলে রপ্তানি করি। গত সপ্তাহে কুয়েতে দুটি কার্গোযোগে পণ্য গেছে। তবে আমদানিকারক দেশগুলোর চাহিদা সব সময়ই আছে, আমরা দিতে পারি না।

তিনি বলেন, বিমানের একটি কার্গো ফ্লাইট চালুর জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে। কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটসের কার্গো চললে আমাদের কেনো নয়। এ কারণে আমাদের বাজার ভারত ও আফ্রিকার দখলে চলে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২০
ইএআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।