ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে শুরু হলো দেশের প্রথম জুয়েলারি এক্সপো

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২২
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে শুরু হলো দেশের প্রথম জুয়েলারি এক্সপো

ঢাকা: বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হলো দেশের জুয়েলারি শিল্পের সর্ববৃহৎ আয়োজন ‘বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো-২০২২’।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) আইসিসিবির ২ নম্বর হলে (পুষ্পগুচ্ছ) এক্সপোর উদ্বোধন করেন ইস্টওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক এবং বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন।


আইসিসিবির ১, ২ ও ৩ নম্বর হলে আগামী শনিবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন। মেলার আয়োজক দেশের ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
দর্শনার্থীদের জন্য র‍্যাফেল ড্রতে থাকছে ২৫ লাখ টাকার পুরস্কার।  
প্রথম পুরস্কার ১০ লাখ, দ্বিতীয় পুরস্কার ৫ লাখ ও তৃতীয় পুরস্কার এক লাখ টাকা করে ১০টি।
সাংবাদিকদের জন্য থাকবে আলাদা র‍্যাফেল ড্র।

বাজুসের সেক্রেটারি দিলীপ কুমারের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাবেক সভাপতি দিলীপ রায় ও এনামুল হক খান দোলন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলজার আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট আনোয়ার হোসেন ও হান্নান আজাদ, এক্সপো কমিটির চেযারম্যান উত্তম বণিক প্রমুখ বক্তব্য দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আজকে একটি ঐতিহাসিক দিন, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে জন্ম দিন। আজকের মতো আর শুভ দিন হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু জন্ম নিয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা সকলে বলি সোনার মানুষ চাই, সোনার দেশ চাই। বঙ্গবন্ধু তেমনি সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে সোনার দেশে পরিণত করার চেষ্টা করছেন।

সবচেয়ে দামি পণ্য স্বর্ণ ও এর আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে জুয়েলারি এক্সপো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই ধরনের মেলার আয়োজন কেউ কখনও কল্পনাও করতে পারেনি। এটি আজকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি এবং আপনাদের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর। তাঁর নেতৃত্ব, বিচক্ষণতার কারণে আজ জুয়েলারি শিল্পের সবাই এক বড় প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়িয়েছেন।

গার্মেন্টস শিল্পের মতো জুয়েলারি শিল্পও সেই জায়গায় পৌঁছে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা সেটা পারবেন। এজন্যই পারবেন যে আপনাদের সঙ্গে আছেন বসুন্ধরার এমডি এবং চেয়ারম্যান। এই পরিবার যেখানে হাত দেয় সেখানে সোনা ফলে।

জুয়েলারি শিল্পের যে যাত্রা বসুন্ধরার এমডি শুরু করেছেন তা সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গায় পৌঁছে দেবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ইমদাদুল হক মিলন।

একটি যুগোপযোগী স্বর্ণ নীতিমালা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে বাজুসের সাবেক সভাপতি দিলীপ রায় বলেন, তিনি অবহেলিত ও হারিয়ে যেতে বসা শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এই নীতিমালা করেছেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি স্বর্ণখাতের সঙ্গে জড়িত সংশ্রিষ্টদের এককাতারে আনায় আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি পেয়েছি উল্লেখ করে দীলিপ রায় বলেন, তার কারণেই জেলা-উপজেলা পর্যায়েও সবাইকে বাজুসের পতাকাতলে আনতে পেরেছি। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর ঘরে ঘরে সামর্থ অনুযায়ী যে স্বর্ণ শিল্প তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন আজকে তার প্রমাণ আমরা দেখতে পাচ্ছি।

তিনি বলেন, আজকে গার্মেন্টস সেক্টর যেভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে আগামীতে সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে স্বর্ণখাত তেমন অবদান রাখবে। আমরা বিদেশেও স্বর্ণ রপ্তানি করবো। এই মেলার মাধ্যমে বিদেশিরাও আসবে।

বাজুসের সাবেক প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান দোলন বলেন, স্বর্ণ নিয়ে মেলা একটা লস প্রজেক্ট। কিন্তু আগামী দিনে তা লস প্রজেক্ট হবে না। এই এক্সপোর মাধ্যমে স্বর্ণ শিল্পকে প্রমোট করা যাবে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি।

সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলজার আহমেদ বলেন, স্বর্ণ সেক্টর অনেক পুরনো। এ ধরনের এক্সপো এটাই প্রথম। এর মাধ্যমে স্বর্ণের কারিগররাও বাংলাদেশে আসতে চাইবে।  

তিনি বলেন, বর্তমানে বাজুসের সদস্য ১৮০ জন, যা আগে ছিল ৩৫ জন। সারাদেশে সদস্য সংখ্যা ২৫ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে তা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

সায়েম সোবহান আনভীর স্বর্ণখাতের সংশ্লিষ্টদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন জানিয়ে বাজুসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আনোয়ার হোসেন বলেন, এই এক্সপোতে স্বর্ণের ভ্যারাইটি নিয়ে মানুষ জানতে পারবে যে বাংলার অলঙ্কার সর্বশ্রেষ্ঠ। আমরা স্বর্ণালঙ্কার দেখার মতো করে তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে চাই।

বাজুসের সেক্রেটারি দিলীপ কুমার বলেন, বসুন্ধরার মতো বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী জুয়েলারি শিল্পের দায়িত্ব নিয়েছে, এতে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। ভবিষ্যতে অনেক দূরে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবো।

দর্শনার্থীদের জন্য পুরস্কার ও র‌্যাফেল ড্র
আয়োজক সংশ্লিষ্টরা জানান, এক্সপোতে মোট ৭০টিরও বেশি স্টল থাকবে। দেশের স্বর্ণ শিল্পীদের হাতে গড়া নিত্য নতুন ডিজাইনের অলঙ্কারের পরিচিতি ঘটাতে জুয়েলারি এক্সপোতে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য ১০ লাখ টাকার প্রথম পুরস্কার ছাড়াও থাকবে আর্কষণীয় সব উপহার, যেখানে র‌্যাফেল ড্রর মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন বিজয়ীরা। দর্শনার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থী ও ক্রেতারা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২২
এমআইএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।