ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফেনীতে কমেছে দেশি মুরগি 

স্টাফ কেরেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
ফেনীতে কমেছে দেশি মুরগি 

ফেনী: দেশি মুরগির ডিম আর মাংস স্বাদ ও পুষ্টির জন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দেশি মুরগির চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম থাকায় বাড়তি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

গ্রামীণ জনপদের গৃহস্থের দেশি জাতের মুরগি পালন কমে যাওয়ায় সরবরাহ কমেছে বলে মনে করেছেন ফেনীর মুরগি ব্যবসায়ীরা।

মুরগি ব্যবসায়ীরা জানান, দেশি মুরগি জোগানের সবটা গ্রামীণ জনপদের গৃহস্থের কাছ থেকে আসে। আগে গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে মুরগি পালন করলেও এখন কমে গেছে। দেশি মুরগি বংশবৃদ্ধি এবং বড় হওয়া সময়সাপেক্ষ। তবে দেশি মুরগির চাহিদা কিন্তু আছেই, তা দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতারা কিনতে আগ্রহী।

শহরের বড় বাজার, পৌর হাকর্স মার্কেট ও মহিপালের মুরগি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশি জাতের বড় মোরগ (রাতা) প্রতিকেজি ৬শ টাকা থেকে ৭শ টাকা দরে বিক্রি করে থাকেন। পাশাপাশি মুরগির কেজি ৪৫০টাকা থেকে ৫০০টাকা দরে বিক্রি করছেন।

শহরের অলিগলিতে হেঁটে মুরগি বিক্রি করেন সামসুউদ্দিন বশর। দেশি মুরগির দাম জানতে চাইলে বলেন, দেশি মুরগির সংকট সারা বছরই থাকে, ব্যাপারি থেকে পাইকারি বেশি কেনা পড়ছে। তিন-চার বছর আগেও মুরগির দাম ছিল ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে। এখন যা অবস্থা, ৪৫০-৫০০ টাকার কমে মুরগি বিক্রি করলে পোষায় না।

দাম শুনে মুরগি ক্রেতা মো. হারুন বলেন, আর অল্প কিছু টাকা যোগ করলেই ১ কেজি গরুর মাংস কেনা যাবে। এখন দেশি মুরগি আর গরু মাংসের দাম তো প্রায় সমান হয়ে গেল।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাণিজ্যিকভাবে দেশি মুরগির লালন পালন নেই। গ্রামের গৃহস্থ বা চাষিরা নিজ বাড়িতে যেসব মুরগি লালন পালন করেন সেগুলো হাটবাজারে বিক্রির সূত্র ধরে ব্যাপারিদের (পাইকার) কাছে চলে আসে। পরে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে চলে যায়। তবে তা সীমিত আকারে হওয়ায় চাহিদা পূরণ হয় না। গৃহস্থ থেকে পাইকাররা মুরগি পিস হিসেবে কম মূল্যে কিনে নিলেও পরে তা বাজারে বিক্রি হয় কেজি দরে।

সোনাগাজী মতিগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসনা আরা বেগম দীর্ঘ ২৬ বছরের সংসার জীবনের শুরু থেকে হাঁস-মুরগি পালন করে আসছেন।  

তিনি জানান, হাঁস-মুরগি পালন করলেও ছোট থেকে বড় হয়ে উঠতে অর্ধেক নষ্ট হয়ে যায়। বাড়ি আশেপাশে থাকলেও কিছু মুরগি কাক ও শিয়াল নিয়ে যায়। আবার রোগ-ব্যধির (গ্রাম্যভাষা-ঝুরুনি) কারণে কিছু মুরগি মারা যায়। মুরগি বড় করতে বাচ্চা থেকে টিকিয়ে তোলা অনেক কষ্টকর। সব মিলিয়ে লোকসানে এখন আর হাঁস-মুরগি পালতে ইচ্ছে নেই জোছনার।

গ্রামে দেশি মুরগি পালন আগের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এলেও প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য বলেছে ভিন্ন কথা।  

প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, ২০০৬ সালের হালনাগাদে ফেনীতে ১১ লাখ ৩ হাজার ৮০৯টি মুরগি পালন করা হলেও ২০১৯ সালের ১২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯৮টি মুরগি পালন করেছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। অর্থাৎ একযুগে পালন বেড়েছে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। তার এক বছর পর ২০২০ সালের সর্বশেষ হালনাগাদের তথ্যে মুরগি পালনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ দেখা যায়।  

তবে বাস্তবে গৃহস্থে দেশি মুরগি পালনের সংখ্যার সঙ্গে এ তথ্যের কোনো ধরনের মিল পাওয়া যায়নি। ২০২০ সালে সেই তথ্য অনুসারে দেশি জাতের মুরগি পালন হয় ২৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫৮৯টি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২ 
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।