রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, পাকিস্তানিরা পরিকল্পিতভাবে বাঙালিকে মেধাশূন্য করতেই বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যার উদ্দেশ্য ছিলো, বাঙালির স্বাধীনতার স্পৃহাকে স্তিমিত করা।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, এই হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করেছিলো পাক হানাদারদের এদেশীয় দোসররা। খুঁজে খুঁজে বুদ্ধিজীবীদের হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেয় রাজাকার ও আলবদররা। নির্মম হত্যাযজ্ঞের মধ্যেও বাঙালি দমে যায়নি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে জীবন দিয়ে এই দেশ মুক্ত করেছিলো।
অনুষ্ঠানে শহীদ শিক্ষক মীর আব্দুল কাইয়ূমের স্ত্রী অধ্যাপক মাসতুরা খানম স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৪ বছর পাকিস্তানি শোষণের কষাঘাতে জর্জরিত হয়েছে বাঙালি জাতি। ১৯৭১ সালে এই অত্যাচার-নির্যাতন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকরা পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। কেননা তারা বুঝতে পেরেছিল, এ দেশ স্বাধীন হবেই। তাই বাঙালি যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সেজন্যই পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
তিনি আরও বলেন, হানাদার বাহিনী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। ক্যাম্পাসের জোহা হলের বন্দিশালায় ধরে নিয়ে আসা মানুষের ওপর নির্যাতন চলতো। এছাড়াও মুন্নুজান হল, পশ্চিমপাড়ার ১৭ নম্বর কোয়ার্টার ও জুবেরী ভবনে তারা নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী কণ্ঠগুলো স্তব্ধ করতেই তারা এই ক্যাম্পাসে নির্মম হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংস তাণ্ডব চালিয়েছিল। এই বর্বরতায় আমি স্বামীকে হারিয়েছি। কিন্তু এটা কষ্টের চেয়ে বেশি গর্বের।
রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামাণিক।
এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
এনএস