ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবীন ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কমিটি করে পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক আইনজীবীর করা রিটের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের এ আদেশের পর ক্যাম্পাসে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।
বৃহস্প্রতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে মোবাইল ফোনে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এ আকুতির কথা জানান সেই ইবি ছাত্রী।
নির্যাতিতা ছাত্রী বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে ফিরতে চাই। নিয়মিত ক্লাসে যেতে চাই। কিন্তু আমি খুব ভয় পাচ্ছি। নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছি।
হাইকোর্টের শুনানিতে তার অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি খুব খুশি। তিনি (ছাত্রলীগ নেত্রী) এত বড় পদে থেকে আমার মতো ছোট মানুষের উপর এভাবে নির্যাতন চালাবে কেন? আমি চাই তার সুষ্ঠু বিচার হোক। ’
ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলেছেন আদালত। নির্যাতনে জড়িত দুই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বুধবার হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন ও আজগর হোসেন তুহিন। তখন তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেন আদালত। সে অনুসারে তারা রিট করেন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক নবাগত ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। র্যাগিংয়ের সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা তাকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখে বলে অভিযোগ তার।
পরদিন সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত দেন ভুক্তভোগী।
অপরদিকে সিনিয়রদের সঙ্গে বেয়াদবি ও বহিরাগত দিয়ে হুমকির শাস্তির দাবি চেয়ে নির্যাতিত ছাত্রীর বিরূদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
এসএএইচ