ইবি: র্যাগিংয়ের নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরীকে নির্যাতনকারীদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ছাত্র ইউনিয়নের র্যাগিংবিরোধী মশাল মিছিল শেষে এ দাবি জানায় সংগঠনটির নেতারা।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংগঠনের সভাপতি ইমানুল সোহানের নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় হয়ে ছেলে ও মেয়েদের হল সংলগ্ন বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জিয়া মোড়ে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এ মিছিলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান সুইট, সহসভাপতি মেহেদী রাফি ও মাহমুদুল হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ নুর আলমসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি ইমানুল সোহান বলেন, ‘সম্প্রতি সময়ে ইসলামীসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে সাধারণ শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমরা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই৷ পাশাপাশি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানাই। যদি তাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার করা না হয়, তাহলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করব। ’
এর আগে বিকাল ৪টার দিকে র্যাগিংয়ের নামে ফুলপরীর ওপর নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসুম ইসলামসহ ৫ জনের হলের আবাসিকতা বাতিল করেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কতৃপক্ষ।
নির্যাতনের ঘটনায় করা চারটি তদন্ত কমিটির প্রতিটিতেই নির্যাতনের সত্যতা উঠে আসছে। পাশাপাশি নির্যাতনের সময় ভিডিও করার সত্যতাও পেয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
ইবির শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা ওই ছাত্রীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখে।
১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত দেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্টের নির্দেশে ক্যাম্পাস ছাড়েন অভিযুক্তরা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
এসএএইচ