শাবিপ্রবি (সিলেট): বহিরাগত প্রবেশ নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৪ জন শিক্ষার্থী ও এক শিক্ষক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৬ জুন) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে কয়েকজন বহিরাগত প্রবেশ করতে চায়। এতে তাদের বাধা দেন নিরাপত্তা প্রহরীরা (গার্ড)। প্রবেশে বাধা দেওয়ায় গার্ডের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও বাগবিতণ্ডায় জড়ায় বহিরাগতরা। এক পর্যায়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে বহিরাগতরা তাদের হুমকি দেয়। বহিরাগতরা সিলেট মহানগর বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদের সহ-সভাপতি মো. দুলাল মিয়ার অনুসারী বলে জানা গেছে।
পরে তারা খবর দিলে মহানগর থেকে আরও বহিরাগত এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের ভেতরে ঢিল ও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে তুমুল সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। কয়েক দফা সংঘর্ষের পর দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যায়। এরপর প্রক্টরিয়াল বড়ির সদস্যদের সঙ্গে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
তবে ঘটনায় অন্তত ১৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।
ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর হোসেন রাকিব বাংলানিউজকে বলেন, বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দিলে তারা গার্ডদের গালিগালাজ এবং তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। শিক্ষার্থীরা এর কারণ জানতে চাইলে তাদের সঙ্গে এলাকার প্রভাব দেখান বহিরাগতরা। পরে তারা ঢিল ও ইট-পাটকেল মারতে শুরু করেন। এতে আমাদের ১৫ জন সহপাঠী গুরুতর আহয় হন, পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুলাল মিয়ার অনুসারী মুস্তাক আহমেদ রাজন বলেন, ছাত্ররা এখানে এসে অবস্থান নিয়েছে, জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছে। আমি হামলাও চালাইনি, কিছু করিওনি। আমি আসছিলাম সমাধান করে দিতে, পরে আবার চলে যাই। তারপর আমাদের লোকাল মুরুব্বিরা এখানে আসেন, তারা দেখেন এখানে কী চলছে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।
এ বিষয়ে শাবিপ্রবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পাসে বহিরাগত (সম্ভবত সামনের এলাকার লোক) প্রবেশ নিয়ে আমাদের গার্ডের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনার বিষয়ে শোনার সঙ্গে আমরা চলে আসি, তবে এর আগেই ঢিল ছোড়া শুরু হয়ে যায়। পরে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ভেতরে নিয়ে আসতে সক্ষম হই। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সিলেটের মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বাংলানিউজকে বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করা নিয়ে বহিরাগত ও গার্ডের মধ্যে হট্টগোল লাগে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা আগে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করি, তার পর একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
আরএইচ