সাভার (ঢাকা): দীর্ঘ ১২ মাস ধরে সাভার সরকারি কলেজের ৩৯ জন শিক্ষক বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটকে বেতন-ভাতার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা জানান, আমাদের কলেজে ১১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। গত ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট সাভার কলেজ সরকারিকরণ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট ৫৬ জন শিক্ষকের এডহক নিয়োগ চলে আসে। এরপর থেকে আমাদের সবার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে শিক্ষকরা কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করলে তিনি শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে আমরা সবাই নিয়মিত কলেজের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু দীর্ঘ ১০ মাস বেতন না পেয়ে আবারও অধ্যক্ষের কাছে যান শিক্ষকরা। তখন তিনি বলেন বেতন দেওয়া সম্ভব নয়।
আজ ১২ মাস বেতন না পেয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বেতনের দাবি জানান শিক্ষকরা।
সাভার সরকারি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক মো. মাসুদ রানা বলেন, আমাদের অধ্যক্ষ চাইলে ৩৯ জন শিক্ষকের বেতনের ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু তার অবহেলার কারণে আমরা ও আমাদের পরিবার আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে।
কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক শিরতাজ বেগম বলেন, আমরা ৩৯ জন শিক্ষক ও তাদের পরিবারের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা এখন অসহায়। আজ ১২ মাস ধরে কোনো বেতন ভাতা নেই। আমাদের পরিবার চালাতে পারছি না।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মো. আরিফুর রহমান বলেন, আমরা আজ এক বছর ধরে কোনো ধরনের বেতন ভাতা পাচ্ছি না, এর মধ্যে দুটো ঈদ গেলো তখনও কোনো ধরনের আর্থিক ভাতা আমাদের দেওয়া হয়নি। আমাদের যতটুকু সঞ্চয় ছিল সেটি দিয়েই এতদিন ধরে পরিবার নিয়ে টিকে আছি। এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। এখন যদি আমাদের বেতন ভাতা অতিদ্রুত বাস্তবায়ন না করা হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।
এ বিষয়ে সাভার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ইমরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, কলেজটি সরকারিকরণের আগে এ শিক্ষকরা আমাদের শিক্ষার্থীদের থেকে যে টিউশন ফি পেতেন সেটা দিয়ে তাদের বেতন দেওয়া হতো। এখন সরকারি হয়ে যাওয়ার পর যে ২০-৩০ টাকা শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি দেয় তা সরকারের ট্রেজারিতে জমা করা হয়। এ বিষয়ে শিক্ষকরা আদালতে একটি মামলাও করেছেন। আমি এ বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ জুলাই ১৮, ২০২৩
এসএফ/আরআইএস