সিলেট: এইচএসসি পরীক্ষায় সিলেট বোর্ডের অধীনে এবার ৮৩ হাজার ৭১৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। তবে সিলেট সরকারি কলেজ ও ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।
পরীক্ষা দেওয়ার দাবিতে এসব শিক্ষার্থীরা বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে রাস্তায় নামে। কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে তারা।
তাদের অভিযোগ, ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল প্রবেশপত্র দেননি। কিন্তু স্কলার্সহোম কলেজ থেকে ফেল করে টিসি নেওয়া ছাত্রদের এই কলেজে ভর্তি করিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো হচ্ছে।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী ফাহিম আহমদসহ আরও অনেকের অভিযোগ, ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল তাদের পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রবেশপত্র দেননি। কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগ তুলেন তারা। আর এ কারণে অন্তত কলেজের ১২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রবেশপত্র পাননি।
তৌফিকুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থীর স্বজন বলেন, তার খালাতো ভাই পরীক্ষার্থী ছিল। প্রবেশপত্রের জন্য খালাকে কয়েকদিন আনা নেওয়া করিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না করতে পারে, এজন্য শাহপরান থানা পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে যান। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজও যান সেখানে। অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিদায় করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও অভিযোগের বিষয়ে ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ লাবিবুর রহমান বলেন, কলেজের ১০/১২ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময় ক্লাসে অনিয়মিত ছিল। সারা বছর তারা ক্লাস করেনি। অনেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খাতায় প্রশ্ন তুলে দিয়ে যায়। এরপরও তাদের মডেল টেস্ট নিয়েছি। সেখানেও তারা ফেল করেছে। এ অবস্থায় ৬/৭ বিষয়ে ফেল শিক্ষার্থীদের কীভাবে পরীক্ষা দিতে দেব?
টাকা নিয়ে প্রবেশপত্র দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারবে না। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ তাদের নিয়ে আমার সঙ্গে বসেছিলেন। তিনিও দেখেছেন, দোষটা আসলে কার। এরপরও বলেছি, তারা আবারও প্রস্তুতি নিলে নতুনদের সঙ্গে নয়, অনিয়মিত হিসেবে তাদের পৃথক ক্লাস করাব।
এদিকে, সিলেট সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বুধবার সিলেট বোর্ডে গিয়ে প্রবেশপত্রের জন্য ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।
পরীক্ষার সময়ে এসে তারা জানতে পরে যে, একাদশে তাদের ভর্তি কার্যকর হয়নি।
এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ফয়েজ নামে একজন বলেন, তিনি সিলেট সরকারি কলেজে সাদিক নামে এক কর্মচারির এইচএসসিতে ম্যানুয়ালি ভর্তি হয়েছিলেন। ১ম বর্ষের পরীক্ষাও দিতে পেরেছেন। কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষায় এসে দেখতে পান তাদের ভর্তি কার্যকর হয়নি। যে কারণে তারা বোর্ড থেকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র ইস্যু হয়নি। একই অবস্থা তাদের কলেজের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর। এ অবস্থায় তারা বোর্ডের শরণাপন্ন হয়েছেন।
এ বিষয়ে সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ জেড এম মাইনুল হোসাইন বলেন, প্রবেশপত্র না পেয়ে পরীক্ষা দিতে না পারার কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। এখন তো সব অনলাইনে ভর্তি। কেউ অন্যভাবে প্রভাবিত হয়ে প্রতারিত হলে দায় কলেজ কর্তৃপক্ষের নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এনইউ/এসএএইচ