শাবিপ্রবি (সিলেট): বিসিএস ৪১তম ব্যাচে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাঈমা আক্তার সুরমা। প্রথমবারের মতো বিসিএসে অংশ নিয়েই ক্যাডার হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি।
বিসিএস ক্যাডার হওয়ার অনুভূতি ও পেছনের গল্প সম্পর্কে জানতে এ মেধাবী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে বাংলানিউজ।
প্রথম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ রহমত এবং আমার বাবা-মা ও মেন্টর হাসব্যান্ড এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাদের সহযোগিতার ফলে অনেক কঠিন কাজ সহজ হয়ে গিয়েছে। ফলে দীর্ঘ এ যাত্রা সংক্ষেপে শেষ করতে পেরেছি।
বিসিএস ক্যাডার স্বামীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার স্বামী বিসিএস পথের পথিক হলেও আমি ছিলাম তার উল্টো। করোনা মহামারির সময় আমাদের টোনাটুনির সংসার শুরু হয়। তিনি ৩৮তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগদানের পর থেকে আমার ক্যারিয়ারের গতি পথ পরিবর্তন হয়ে যায়। সে থেকে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্নের দিকে ছুটার সিদ্ধান্ত নিই। তবে পরিবার ও শ্বশুরবাড়ির পূর্ণ সমর্থনই ছিল আমার মূল শক্তি। তখন ৪১তম বিসিএস দিয়েই আমার যাত্রা শুরু হয়।
প্রস্তুতি শুরুর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময় থেকে বিসিএসের পড়াশোনা শুরু করেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে বিসিএসের প্রতি কোনো ইচ্ছে ছিল না। তবে নিজের একাডেমিক সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়ার সুপ্ত বাসনা ছিল। এক সময় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর দুইটা শেষ হয়ে যায়। তবে দুই পরীক্ষাতেই আমার আশানুরূপ ফলাফল হয়। এরই মধ্যে আবার বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। পরে বিসিএসের দিকেই নিজেকে ধাবিত করি।
প্রথম চাকুরি পাওয়ার অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার আগে অন্য কোথাও পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। প্রথম কোনো প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সফলতা পেয়েছি, এই অনুভূতিটা আসলে অন্যরকম।
বিসিএস প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, যখন প্রিলি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই, তখন থেকে নিজের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস কাজ করা শুরু করে। এরপর আমার স্বামীর দিক-নির্দেশনায় আমরা ৭-৮ জন মিলে লিখিত পরীক্ষা জন্য একটা গ্রুপ খুলি। সেখানে ছোট ছোট সিলেবাস করে, সপ্তাহে ২-৩টা পরীক্ষা দিতাম। এতে আমাদের লিখিত প্রস্তুতি অনেক ভালো হয়। এরপর একইভাবে শুরু হয় ভাইভার প্রস্তুতিও।
পরিবারের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শৈশবকাল থেকেই আমার বাবা-মায়ের পূর্ণ সহযোগিতা ছিল। সেজন্য ছোটকাল থেকেই নিজের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল। মূলত তাদের সহযোগিতা ও সাহসের ফলেই আমি ক্যাডার হতে পেরেছি। এক্ষেত্রে আমার মায়ের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বিসিএস একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া, এতে অনেক বেশি ধৈর্য ও সাধনার প্রয়োজন। তাই ধৈর্য, শ্রম আর প্রচেষ্টা থাকলে যে কোন বাঁধাই টপকানো যায়। পরিশেষ দেশ এবং দেশের শিক্ষায় অবদান রাখায় প্রত্যয় ব্যক্তয় করেন এ মেধাবী শিক্ষার্থী।
প্রসঙ্গত, সাঈমা আক্তার সুরমা হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মজলিশপুরে গ্রামের কৃতি শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এসএএইচ