ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দাবির অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ ঘটলে কাজ করা কঠিন হবে: ঢাবি উপাচার্য

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৪
দাবির অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ ঘটলে কাজ করা কঠিন হবে: ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): বিগত সরকারের অপশাসনের কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ কাজ করছে। তবে দাবির অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ হলে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।

অস্থিরতা দূর করে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে দায়িত্ব গ্রহণ শেষে উপাচার্যের লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের ত্রাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ড. নিয়াজ।

উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ আছে। তবে দাবির অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ হলে কাজ করা যাবে না। একটা বড় সময় অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যেতে হলে আমার কার্যকর সময় কমে যাবে। আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সবার সম্পর্ককে একটা মোটামুটি সহনশীল পর্যায়ে সম্পর্কগুলো এনে কাজ চালু করতে হবে।

একাডেমিক কার্যক্রম কবে নাগাদ চালু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একটু পরিস্থিতি দেখি। উঠে পড়ে চেষ্টা করতে থাকব।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের অপশাসনের কারণে আমাদের সমাজ-জাতি চূড়ান্তভাবে বিভাজিত হয়ে গেছে। এখান থেকে একত্রিত হওয়ার প্রক্রিয়াটা একটু কঠিন। যেসব ফৌজদারি অপরাধ সেগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার হবে। তবে যতটুকু পারা যায়, আমরা সহনশীলতার মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব। বর্তমান শিক্ষার্থীরা একটি সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আসছে। ট্রমা মোকাবিলা করে পড়াশোনায় থিতু হওয়া এখন কাজ। এই প্রক্রিয়ায় সবার সহযোগিতা দরকার।

হলগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বড় পরামর্শদাতা। তাদের সাথে কথা বলতে চাই। তবে ‘নিখুঁত’ বলে কিছু নেই। মোটামুটি গ্রহণযোগ্য কাউকে দিয়ে আমি কাজ শুরু করতে চাই।

গবেষণার বিষয়ে তিনি বলেন, গবেষণার উদ্যোগ বাড়ানো দরকার। এক্ষেত্রে আগের প্রশাসন কিছু ভালো কাজ করেছে। এই ধারাবাহিকতা আমরা যেন বাড়াতে পারি। ইন্ডাস্ট্রি এবং প্র্যাকটিসিং জগতের সাথে আমাদের সম্পর্ক তৈরি জরুরি। এটা বাড়াতে হবে।

নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কখনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিইনি। দল কেন্দ্রীক রাজনীতিতে আমার কোনো আগ্রহ নেই। এটি আমার জায়গা না। আমি খামখেয়ালী বা অনুরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেব না। এ ধরনের পরিসরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাইকে খুশি রাখা সম্ভব না। কিন্তু যুক্তির ভিত্তিতে আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করব। আমি কোনো লুকোচুরি করব না। চেষ্টা করতে থাকব। যখন মনে হবে চেষ্টার ফলেও আমি তেমন কিছু করতে পারছি না, তখন আমি বিদায় নেব। আমি (চেয়ারে থাকার) কোনো লম্বা-চওড়া পরিকল্পনা নিয়ে আসিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আমাদের সমাজের এবং রাষ্ট্রের বৃহত্তর সিদ্ধান্তের একটি প্রভাব থাকবে। তবে মূল যে আদর্শ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন মধ্যেই তা রয়েছে; মানবিক দুর্বলতা বাদ দিয়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ করা। বড় মাপের সিদ্ধান্ত নেওয়া ক্ষেত্রে আমাদের সময় লাগবে। তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সমাজের একটি প্রতিষ্ঠান। সমাজ কী চাচ্ছে, তাও বড় বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।