গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় বিশ্বমানের শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করছে বেসরকারি সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে)।
জেলা শহর সংলগ্ন গাইবান্ধা-সাঘাটা রোডে নশরৎপুর গ্রামে সোয়া তিন একর জমির ওপর আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর দৃষ্টিনন্দন ‘জিইউকে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজটির’ নির্মাণ কাজ শেষের দিকে।
সেখান গিয়ে দেখা যায়, নানা জাতের ফুল ও ফলদ গাছপালায় সাজানো হচ্ছে ভবনটি। শিশু থেকে যে কোনো বয়সী মানুষ এ ক্যাম্পাসে এলেই মন ভরে উঠবে। পুরোপুরি কোলাহলমুক্ত ও মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে দুটি পৃথক খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে নিরাপদ ও মানসম্মত আবাসন ব্যবস্থা।
অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ অডিটোরিয়াম ও পৃথক সাংস্কৃতিক চর্চা কক্ষ। ভবনের নিচতলায় থাকছে সুবিশাল কাফেটেরিয়া। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্যই এটি তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে অত্যাধুনিক জিম ও সুইমিংপুল। স্কুল ভবনের সঙ্গেই দূরের দর্শনার্থী ও অভিভাবকদের জন্য নির্মিত হয়েছে আবাসিক সুবিধা।
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে বেশ কয়েকটি পরিবহন সুবিধা। পাঠদানের পাশাপাশি কালচারাল ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব, ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, বিজ্ঞান, লোগো ও রোবোটিকস ক্লাবের মাধ্যমে সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম যুক্ত করা হয়েছে।
এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বৈশিষ্ট্যের মধ্যে প্লে থেকে কেজি পর্যন্ত ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল কারিকুলামে পাঠদান করা হবে। শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে তিনটি ভাষায় দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। তবে, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কারিকুলামে পাঠদান করা হবে।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জহুরুল কাইয়ুম জানান, ২০২৫ সালে প্লে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। পড়ালেখার পাশাপাশি আমরা শিক্ষার্থীদের ভালো নাগরিক হিসেবে তৈরি করতে চাই। এজন্য শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মনো পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা প্রাইভেট পড়তে হবে না। শিক্ষার্থীরা যাতে সাবলীলভাবে বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলতে ও লিখতে পারে এজন্য বিশেষ পদক্ষেপ থাকবে। শ্রেণিকক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে নিবিড়ভাবে পাঠদান করা হবে।
জিইউকে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আব্দুস সালাম জানান, গণ উন্নয়ন কেন্দ্র তিন যুগের বেশি সময় ধরে উপানুষ্ঠানিক, প্রাক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্বমানের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। অভিভাবকেরা সন্তানদের ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করিয়ে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন, আর আমরা সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে অভিভাবকদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্কুল ও কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি। বিশ্বের যে কোনো দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যাতে এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে, সে লক্ষ্যে বিদেশি শিক্ষক ও ভলানটিয়ার দিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য দেশের ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানে শিক্ষা সফরের পাশাপাশি বিদেশে শিক্ষা সফরের সুযোগ থাকবে। থাকবে সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ ও নীতি-নৈতিকতার চর্চার ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রধান শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে সম্পৃক্ত হয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসাদুজ্জামান সুবহানী। তিনি বাংলাদেশ আর্মি এডুকেশন কোরের পরিচালক হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রতিষ্ঠানের পড়ালেখার ফি ও আবাসন বিষয়ে তিনি জানান, উত্তরাঞ্চল ও দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে সাধ্যের মধ্যেই রাখা হয়েছে-যাতে করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে পারেন। দেশের যে কোনো অঞ্চল ও দেশের বাইরের শিক্ষার্থীরাও এখানে ভর্তি হতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
এসআই