ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবির ভর্তি প্রক্রিয়ায় দূর্নীতির অভিযোগ

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৪
জাবির ভর্তি প্রক্রিয়ায় দূর্নীতির অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বেচ্ছাচার, অনিয়ম ও দূর্নীতি অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের একাংশ।

মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সংবাদ
সম্মেলনে শিক্ষকরা এই অভিযোগ করেন।



একই সঙ্গে তারা প্রশাসনের কাছে ৫টি দাবি পেশ করেন।

তাদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভর্তি প্রক্রিয়ায় নজিবিহীনভাবে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভর্তি সংক্রান্ত শর্তাবলি শিথিল করে পূর্নবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত কলা ও মানবিক অনুষদ ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় স্বেচ্ছাচার কর্তৃত্বমূলক। এছাড়া বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে সামনে রেখে পূর্ব ঘোষিত শর্ত শিথিল করা হয়েছে যা স্পষ্টতই দূর্নীতি।

শিক্ষকদের মতে, প্রশাসন কর্তৃক ভর্তির শর্তাবলি পূনর্নিধারণের ফলে আবেদনকারীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। গত ১৪ আগস্ট প্রচারিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যারা আবেদন করেছে তাদের সঙ্গে ২৯ আগস্ট প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্পষ্ট একটি বৈষম্য তৈরি হয়েছে। প্রথম দফায় আবেদন করা শিক্ষার্থীরা প্রথম দফার শর্ত অনুযায়ী যেসব বিষয়ে আবেদন করতে পারেন নি, একই যোগ্যতা নিয়ে পরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অন্য শিক্ষার্থীরা সেসব বিষয়ে আবেদন করতে পেরেছে। ফলে যে কোন

শিক্ষার্থী আইনের আশ্রয় নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভর্তি পরীক্ষা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়কে এরূপ ঝুঁকির মধ্যে ফেলার কোনও এক্তিয়ার প্রশাসনের নেই।

শিক্ষকরা বলেন, উপাচার্যের পদ/ক্ষমতা কোনোভাবেই কোনো শিক্ষার্থীর ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। আমরা ‘উপাচার্য কোটা’র অবসান চাই। একই সঙ্গে পোষ্য কোটার ক্রমবর্ধমান চাপ বিবেচনা করে এতে নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক আসন বরাদ্দ দিয়ে এই কোটাকে প্রতিযোগীতার আওতায় নিয়ে আসা জরুরী।

ইউনিট ভিত্তিক পরীক্ষা হওয়ায় অনুষদভূক্ত প্রত্যেকটি বিভাগের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে প্রত্যেকটি বিভাগের শিক্ষক সম্পৃক্ত থাকে। ফলে প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা ও দায়বদ্ধতা কেবল বিভাগের থাকছে না। সকল বিভাগের প্রশ্নপত্রের জন্য প্রত্যেকে দায়বদ্ধ থাকছেন না বান্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী সকল শিক্ষককের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং প্রশ্নের নিরাপত্তাকে হুমকির
সম্মুক্ষিণ করতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।

তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে সকল বিভাগের অংশগ্রহণে নির্ধারিত পূর্বের শর্তাবলি অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হোক, দুই দফায় আবেদনকারীদের মধ্যকার বৈষম্য দূর করে সবাইকে সমান সুযোগ প্রদানের ব্যবস্থা করা হোক, শর্তাবলি নির্ধারণের পর কোন গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে শর্ত শিথিল করা চলবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইউনিট ভিত্তিক পরীক্ষার স্থলে বিভাগ-ভিত্তিক পরীক্ষ গ্রহণ করা হোক, উপাচার্য কোটার নামে ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ হোক, পোষ্য কোটাকে প্রতিযোগীতার আওতায় আনা হোক।

দর্শন বিভাগের শিক্ষক রায়হান রাইন বলেন, প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে না নিলে আমরা অবশ্যই এবং অচিরেই কর্মসূচি ঘোষণা করব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, প্রভাষক আনিছা পারভীন জলী, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এএসএম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।