ঢাকা: শিক্ষা ব্যবস্থাকে মানসম্পন্ন করতে সরকার প্রণীত বেসরকারি বিদ্যালয় আইনের শতভাগ বাস্তবায়ন করার পক্ষে মত দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।
বহুল প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের সঞ্চালনায় এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের সাবেক উপাচার্য এসএমএ ফায়েজ বলেন, শিল্পপতিরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে এগিয়ে এসেছে ব্যবসার জন্য। সমাজসেবায় নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সরকার সমাজসেবকদের আর্থিক সহায়তা না দিলে এ ব্যবসা কোনো দিনই বন্ধ হবে না।
তিনি বলেন, পাবলিক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুযোগ না পেয়েই শিক্ষার্থীরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আর এখানে শিক্ষার মান না বাড়লে জাতি পিছিয়ে পড়বে।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, কবুতরের খোপে ভাড়াটে জুনিয়র শিক্ষক দিয়ে সেরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালানো হচ্ছে। আইনের শতভাগ বাস্তবায়ন না হলে এ অবস্থাই চলতেই থাকবে।
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. গোলাম রহমান বলেন, সনদ বিক্রি হচ্ছে একথা সত্য। কেন বন্ধ হচ্ছে না? বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রয়োজনীয় জনবল নিয়ে এ সব সমস্যা সমাধান করতে পারে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, প্রকৃত শিক্ষা উদ্যোক্তা ও শিল্প উদ্যোক্তাদের আলাদা করা গেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়বে। শিক্ষা উদ্যোক্তাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ৫ কোটি টাকা যোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই শিল্প উদ্যোক্তারা এ সুযোগটি নিচ্ছেন।
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। দেশে শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও গবেষণার জন্য আর্থিক বরাদ্দ দরকার।
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা অনেক। সম্ভাবনাও অফুরন্ত। নিজস্ব ক্যাম্প ও প্রয়োজনীয় শিক্ষক-সরঞ্জাম পেলে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আরিফা রহমান রুমা বলেন, দেশের ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। বাণিজ্যিক বিষয়গুলোর সঙ্গে আবশ্যিক বিষয়গুলো না পড়াতে আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন দরকার।
গোলটেবিল আলোচনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক এমএ রাজ্জাক প্রমুখ।
** বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মুনাফা অর্জনের সোপান
** মঞ্জুরি কমিশনকে স্বাধীন, শক্তিশালী করতে হবে
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৪