ঢাকা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা থেকে সরকারি কলেজগুলো কেড়ে নিলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাড়তি চাপে হাবুডুবু খাবে। পাশাপাশি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বিশৃঙ্খলা ও সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোর মধ্যে বৈষম্য আরো বাড়বে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিনেট অধিবেশনে সিনেট সদস্য এবং শিক্ষাবিদরা এমন অভিমত ব্যক্ত করে এমন প্রস্তাব থেকে সরে আসতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট কমার পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়ন আরো বৃদ্ধি হয়েছে দাবি করে সিনেট সদস্যবৃন্দ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দেরও আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুরের প্রধান ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে সিনেট অধিবেশন শুরু হয়। দিনব্যাপী এ অধিবেশনে প্রায় অর্ধশত সিনেট সদস্য বক্তব্য দেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীর বলেন, সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভূক্ত করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে পূঁজি করে একটি গোষ্ঠির ব্যাপক তৎপরতা রহস্যজনক।
যেখানে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিজেরাই সেশনজটে রয়েছে সেখানে সরকারি কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হাবুডুবু খাবে। প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে একটি কমিটি করে গবেষণার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা উচিত।
প্রাক্তন চিফ হুইপ সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বলেন, অনার্স কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে গেলে বেসরকারি কলেজের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে একটি সমন্বিত ও সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সরকারি কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার প্রস্তাবনাকে একটি উদ্ভট চিন্তা বলে মনে করেন শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে কেউ ভুল বুঝিয়ে থাকতে পারেন। এমন সিদ্ধান্ত ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও নেই। প্রধানমন্ত্রীকে এটা অবহিত করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিটিউটের অধ্যাপক ওয়াহিদুজামান বলেন, ওই প্রস্তাব বাস্তবায়নে মূলত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইন্ধন রয়েছে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম এ মান্নান, ইউএসটিসির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ, বিভিন্ন বিভাগের কমিশনার, কলেজ অধ্যক্ষ, অধ্যাপক অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৪