খুলনা: বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান চার্জ দ্য এফিয়ার্স ড. ফার্দিনেন্দ ভন ওয়হি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) পরিদর্শন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে জার্মানি ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন সম্ভাবনার ওপর এক মতবিনিময় সভায় তিনি বক্তব্য রাখেন।
সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্রেস্ট উপহার দেন।
পরে উপাচার্যের দপ্তরে রাষ্ট্রদূত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষাণার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবহিত হন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষক জার্মানি থেকে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা সম্পন্ন করেছেন জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
উপাচার্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধিসহ দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভবিষ্যতে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। একই সঙ্গে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যত সম্ভাবনার ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) টিপু সুলতানসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় একাডেমিক ভবন অডিটরিয়ামে জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাদিকুল আমিনের পরিচালনায় এবং জার্মান এলামনাই খুলনা চ্যাপ্টারের সমন্বয়কারী প্রফেসর ড. নাজমুস সাদাতের উপস্থিতিতে মতবিনিময় সভায় রাষ্ট্রদূত জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা স্কলারশিপ, গবেষণা এবং বাংলাদেশ-জার্মানির মধ্যকার বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জার্মানিতে এখন তিন হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা ও গবেষণারত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এখন প্রয়োজনমূখী গবেষণায় জোর দিতে হবে। যে কোনো বিষয় দ্বি-মত দেখা দিলে বিশ্ববিদ্যাল থেকে গবেষণা বা তথ্য-তত্ত্বের ভিত্তিতে যৌক্তিক ও বস্তনিষ্ঠভাবে দিক-নির্দেশনা দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি এ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখার অভিপ্রায়ে খুলনায় এসেছি। ঢাকার গুলশান বা বারিধারা যে সারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না, তা আমি প্রত্যক্ষ করছি। আমি বাগেরহাট ষাটগম্ভুজ মসজিদ দেখেছি। এ দেশের প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আমাকে অভিভূত করছে। আমি মংলাবন্দরকে এ অঞ্চলের গেটওয়ে বলে অভিহিত করতে চাই। শিল্প-বাণিজ্যে এ অঞ্চলে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। জার্মানির বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশের পণ্য ব্যবহারে অভ্যস্থ। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার ভাগ্য উন্নয়ন হলে তারা খুশি। তবে তিনি দুই দেশের বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষার ওপরও জোর দেন। এর আগে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো-ন্যানো মেটেরিয়্যাল ল্যাব, ফিশারিজ ল্যাব, নিউট্রিয়েন্ট ডায়নামিক্স ল্যাবসহ কয়েকটি ল্যাব পরিদর্শন করেন।
বায়ো-ন্যানো ল্যাবে চিংড়ি মাছের খোলস দ্বারা তৈরি অপটিক্যাল ট্যান্সপারেন্ট ন্যানো ফ্লিমের ব্যাপারে তিনি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ সময় সংশ্লিষ্ট ল্যাবের গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ সময় : ১৭০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫