ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রযুক্তির কল্যাণে সহজেই ফলাফল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৫
প্রযুক্তির কল্যাণে সহজেই ফলাফল

ঢাকা: মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের বিষয়টি এখন পুরোপুরিই তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি প্রত্যয়ে সরকারের এ অগ্রগতি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

আগে ডাকযোগে বা বাহক মারফত দেশজুড়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল পাঠানো হতো।
 
২০০৯ সাল থেকে এ দুই পরীক্ষার ফল পাঠানো শুরু হয়, ইমেইলের মাধ্যমে। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা ঘরে বসেই নির্দিষ্ট সময়ে ইমেইলে ফল পাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
 
একই বছর শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটেও ফল প্রকাশ শুরু হয়। এখন সব স্কুল-কলেজের ফল সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট লিংক-এ ঢুকে জানা যাচ্ছে পরীক্ষার ফলাফল।

এ ছাড়া প্রতিটি স্কুল বা কলেজও নিজ প্রতিষ্ঠানের কোড নম্বর দিয়ে ফলাফল ডাউনলোড করে নিতে পারছে।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই পদ্ধতি চালু হওয়ায় শিক্ষা বোর্ডগুলোকে হাজার হাজার পৃষ্ঠার রেজাল্ট শিট আর তৈরি করতে হচ্ছে না। ফলে, সারাদেশে ফল পাঠানোর ঝক্কি-ঝামেলাও থাকছে না।
 
গত কয়েক বছর ধরে ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে খুদেবার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে ফল জানানোর চেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইমেইলে ফল পাঠানো এবং এসএমএসের মাধ্যমে খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করার সুযোগও।
 
২০০৯ সালে প্রথম এসএসসি পরীক্ষার ফল পাঠানো হয় ইমেইলের মাধ্যমে। ওই বছরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্স করে গোপালগঞ্জ ও সিলেটের দুটি কলেজের ফল জানিয়ে সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

তারও আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুদেবার্তার মাধ্যমে ফল প্রকাশের উদ্বোধন করেছিলেন।
 
বর্তমান সময়ের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কাজে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের চিন্তা করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ফল জানার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়েছেন।

এ ক্ষেত্রে মাঝে-মধ্যে কিছু বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে বটে; কিন্তু সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় খুব দ্রুতই এর প্রসার ঘটেছে।
 
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে পাবলিক পরীক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন ঘরে বসেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা পরীক্ষার ফল জানতে পারছেন।
 
জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ইমেইলে ফল পেতে নিজেদের খোলা অথবা বোর্ডের খুলে দেওয়া ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করতে পারছে। দেশের সবগুলো শিক্ষাবোর্ড গত কয়েক বছর ধরে ইমেইলে ফল পাঠাচ্ছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।

এমন অনেক শিক্ষার্থীই আছেন যারা প্রত্যাশা অনুযায়ী নম্বর না পেয়ে ফল পুনর্মূল্যায়ন করাতে চান। কিন্তু এই প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। পুনর্মূল্যায়নের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের সরকারি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি টেলিটকের সৌজন্যে ২০০৯ সালের এসএসসি পরীক্ষা থেকে খাতা পুনর্মূল্যায়নের নতুন নিয়ম শুরু করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
 
এইচএসসি পরীক্ষার খাতাও একইভাবে পুনর্মূল্যায়ন করা যাবে। কিছু নিয়ম মেনে খুদেবার্তা পাঠালেই নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে পাওয়া যাবে পুনর্মূল্যায়নের ফল এবং তা ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হবে।
 
এদিকে, শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সব কাজে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোর কম্পিউটার কেন্দ্র। তবে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার আগে দেশজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত হতে হবে।
 
ফল জানার সুযোগ:
শনিবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও দেশের প্রায় ১৫ লাখ পরীক্ষার্থী মোবাইলে এসএমএস করে ও ইন্টারনেটে ফল জানার সুযোগ পান।
 
আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এসএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিল এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফল www.educationboardresults.gov.bd এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে।
 
এ ছাড়া মোবাইল ফোনে ফল জানার জন্য SSC লিখে স্পেস  দিয়ে বোর্ডের প্রথম তিন বর্ণ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠিয়ে অনেকেই ফিরতি এসএমএসে ফল পেয়েছেন। (উদাহরণ- SSC  DHA 123456 2015)।
 
মাদ্রাসা বোর্ডের জন্য DAKHIL (স্পেস) MAD (স্পেস) 2015 লিখে ১৬২২২ ও কারিগরি বোর্ডের জন্য SSC (স্পেস) TEC (স্পেস) ২০১৫ লিখে ১৬২২২ পাঠিয়েও ফল পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
 
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ফলাফল ডাউনলোড করতে পেরেছে।
 
এবার ২৭ হাজার ৮০৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেন। এরমধ্যে সাত লাখ ৩৩ হাজার ২২০ জন ছাত্র এবং ছয় লাখ ৯৯ হাজার ৫২৫ জন ছাত্রী।
 
এবার ফল পুনর্মূল্যায়নের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে ১০ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে। আবেদন পদ্ধতি টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রদত্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
 
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেন। আর জিপিএ-৫ পান ৮২ হাজার ২১২ জন।

প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের হরতালের কারণে এবার মাধ্যমিক স্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষার পাঁচ দিনে ৩৭টি বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৫
এমএইচপি/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।