ঢাকা: উন্নত দেশ হিসেবে ভবিষৎ বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, পাঁচ বছরে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী উন্নীত করা হবে।
কারিগরির শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরির বাজারে চাহিদসহ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সমস্যা সমাধনের আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের
মিলনায়তনে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষদের সম্মেলন এবং ‘ইন্ডাস্ট্রি-ইনস্টিটিউট লিংকেজ’ বিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি।
অগ্রাধিকারের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাস্তবসম্মত জ্ঞান অর্জন না করলে শুধু সাধারণ শিক্ষার সনদ নিয়ে বাজারে আর চাকরি মিলছে না।
বর্তমানে বাংলাদেশের ১০ কোটি ৫৬ লাখ মানুষ কর্মক্ষম উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শতকরা হারে তা ৬৬ শতাংশ। ২০৩০ সালে তা ৭০ শতাংশ হবে। এ এক বিশাল সুযোগ। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে, নতুন প্রজন্মকে আধুনিক কারিগরি প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলতে হবে।
এই কর্মক্ষম মানুষকে দক্ষ করে তুলতে পারলে বিশ্বজয় করতে পারবো জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০ বছর পর আর তারা যুবক থাকবে না। সুতরাং এখন থেকেই শুরু করতে হবে।
ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) পলিটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি অর্জনের জন্য আরও ২৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার প্রকল্প মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদন হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্প পাসের পর বিশ্বে চাহিদার কথা মাথায় রেখে নতুন নতুন সাবজেক্ট খোলার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান নাহিদ।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, আরও চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও দু’টি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে।
কারিগরিতে প্রথমবার ৪২০ জন শিক্ষককে সিঙ্গাপুর থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আরও এক হাজার ১৫০ জনকে পাঠানোর চুক্তি করা করা হয়েছে। চীনসহ বিভিন্ন দেশে আরও প্রশিক্ষণ দেব।
সরকার কারিগরি শিক্ষায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ২০০৮ সালে কারিগরিতে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল ১.২%, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩.১১%। ২০২০ সালের মধ্যে এ হার ২০%এ উন্নীত করা হবে।
তিনি বলেন, ২৩টি আন্তর্জাতিক মানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে নতুন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হচ্ছে। বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন আরও এক লাখ শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কারিগরি খাতে আগে কোনো প্রকল্প ছিল না। এ সরকারের সময়েই কারিগরি খাতে ৫টি বড় বড় প্রকল্প উন্নয়ন প্রকল্প চলছে। আরও ১২টি পাস হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য চারটি বিভাগীয় শহরে একটি করে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে, বাকি তিনটিতেও স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। পলিটেকনিকে নারীদের জন্য ২০% কোটা সংরক্ষিত ও শতভাগ নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) অশোক কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেসন্স অফিসার ড. মো. মোখলেছুর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুবোধ চন্দ্র ঢালী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দু’দিনব্যাপী কর্মশালায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষরা অংশ নিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে অধিদপ্তরের নতুন ওয়েবসাইট ছাড়াও সেবাকেন্দ্র এবং সিটিজেন চার্টার উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
এমআইএইচ/পিসি