রাবি: ‘কয়েকদিন পর আন্দোলন স্তিমিত হয়ে গেলে খুনিরা আস্কারা পাবে। তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মঙ্গলবার (০৩ মে) দুপুরে রাবিতে এক মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
রাবির সিনেট ভবনের সামনে বেলা ১১টায় এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে রাবি শিক্ষক সমিতি।
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমরা কোনও অবস্থাতেই আশ্বাসে কান দেব না। আমরা আর ছাড় দিতে রাজি নই, আমরা দ্রুত বিচার দেখতে চাই। এভাবে বারবার হত্যা করা হবে আর আমার রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বিচার চাইবো তা হবে না। দেশের সব মানুষকে নিয়ে সব হত্যাকাণ্ড নিশ্চিহ্ন করার আন্দোলন করবো।
তিনি সব দায় সরকারের ওপর ছেড়ে না দিয়ে প্রত্যেককে নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সমাবেশে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব প্রফেসর মাকসুদ কামাল বলেন, আজকে যারা রেজাউলের নামে কুৎসা করছেন, তারা পুরো বাংলাদেশের নামে কুৎসা করছেন। আমাদের এদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সমাবেশে অধ্যাপক রেজাউল করিমের স্ত্রী হোসনে আরা বলেন, আজ ১১ দিন হয়ে গেলো। কোনও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। আমি বিচার দেখতে চাই। এ জন্য আমি সরকারে দিকে চেয়ে থাকলাম।
রাবির উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘অধ্যাপক রেজাউলকে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে হত্যা করা হয়েছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধির জায়গা, আর রেজাউল মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতেন।
রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এ আন্দোলনে পরাজিত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এ আন্দোলনে আমরা গুপ্তঘাতকদের পরাজিত করেই ছাড়ব। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আছে বলে আমরা মিথ্যাকে সায় দেব না। আমাদের লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে। রেজাউল হত্যাকারীদের কাঠগড়াই দেখতে চাই, বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেখতে চাই না।
দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সমাবেশে রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ্ আজমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর রেজাউল করিম সিদ্দিকীর মেয়ে রেজওয়ানা হাসিন শতভি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তাবিউরর রহমান, বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক মোকাদ্দাম হোসেন, রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি নীরেন্দ্র নাথ মোস্তাফী, রাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধরণ সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল করিম, রাবির সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন প্রমুখ।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিভাগের ব্যানারে সিনেট ভবনের সামনে মহাসমাবেশে যোগ দেন।
গত ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহীর শালবাগান এলাকায় নিজ বাড়ির অদূরে অধ্যাপক রেজাউলকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৬
এসআর