নতুন বই বুকে জড়িয়ে গন্ধ নিতে নিতে কথাগুলো বলছিল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরিকুল ইসলাম রাজিব। কন্ঠস্বর থেকে ঝরে পড়ছিলো আনন্দের ফোয়ারা।
রোববার (০১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গনে পাঠ্যপুস্তক উৎসবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছ থেকে বই গ্রহণ করে রাজিব।
বছরের শুরুতে নতুন বই পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের মতো উল্লসিত তরিকুল ইসলাম রাজিবও। দৃষ্টিশক্তি যাদের নেই, ঘ্রাণশক্তি তাদের প্রখর। তাই তো বারবার নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিচ্ছিল ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলেশন ডেভলপমেন্ট অরগানাইজেশনের (বারডো) সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজিব।
রাজিব পাঠ্যপুস্তক উৎসবে এসেছিল তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক মো. সাইদুল হকের সঙ্গে।
রাজিব বাংলানিউজকে বলে, ‘মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে নিজে নিজে শুনতাম আর পড়তাম। এছাড়া সমাজকল্যাণ অধিদফতরের কয়েকটি বই ব্রেইল পদ্ধতিতে ছাপা হয় আমাদের জন্য। ব্রেইল পদ্ধতির বই বাজার থেকে কেনা ব্যয়বহুল। অন্য বছরগুলোতে নিজেদের বঞ্চিত মনে হতো। এখন এ উৎসবে সম্পৃক্ত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে’।
‘আজকে নতুন বই পেয়ে মনে আমাদের আর কোনো ঘাটতি নেই। আমাদেরকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতোই মনে করেছে সরকার। তাই বিশেষ পদ্ধতিতে আমাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বের করেছে। এতো বড় মানুষের কাছ থেকে বই পেয়ে সত্যিই কী যে ভালো লাগছে প্রকাশ করার মতো না’- একনাগাড়ে কথাগুলো বলে রাজিব।
ভবিষ্যত স্বপ্নের কথা জানিয়ে মেধাবী এ শিক্ষার্থী আরও বলে, ‘উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে ভালো মানুষ হতে চাই। সমাজে প্রতিবন্ধীদের জন্যও কিছু অবদান রাখতে চাই।
পরিবার ও স্কুলের সহায়তায় আমার জীবনের যে কমতি রয়েছে, সেটি অনুভব করি না’।
এ বই হাতে পেয়ে নিজের মনের জোর আরও বেড়ে গেলো বলেও যোগ করে রাজিব।
বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৭
এমসি/আরআইএস/এএসআর