ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবি-বুয়েট সংঘর্ষের নিরপেক্ষ বিচার চান শিক্ষার্থীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
ঢাবি-বুয়েট সংঘর্ষের নিরপেক্ষ বিচার চান শিক্ষার্থীরা ঢাবি-বুয়েট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনার মূল অপরাধীদের বিচার চান সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। এ ঘটনায় দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ই আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

গত শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাতে পলাশীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গাঁজা সেবন থেকে ঘটনার সূত্রপাত।

বুয়েটের শহীদ মিনার মোড়ে একটি ওভারপাস রয়েছে। যেখানে নিয়মিত গাঁজা সেবন করা হয়। দুই বিশ্ববিদ্যালয়, লালবাগ ও বকশিবাজারের কিছু ছেলে নিয়ে একটা গ্রুপ আছে। বৃহস্পতিবার তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনার জেরে পরদিন জহুরুল হক হলের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইমরানকে তিতুমীর হলে আটক করে রাখা হয় এবং মারধর করা হয়। তখন তাকে উদ্ধার করতে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

জহুরুল হক শাখা ছাত্রলীগ সূত্র বলছে, ইমরানসহ কয়েকজনের আগে থেকে বুয়েটের দিকে যাতায়াত ছিল। গাঁজা সেবন করতো তারা।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ইমরান বাংলানিউজকে বলেন, তারা আমাকে হলে নিয়ে মারধর করে। আমি তাদের নাম জানি না, কিন্তু তাদের সবার চেহারা দেখলে শনাক্ত করতে পারবো।  

যদিও নিজে গাঁজা সেবন করার কথা অস্বীকার করেন।

একই রাতে ঢাবির এক শিক্ষার্থী তার বান্ধবীকে বুয়েটে ফিরিয়ে দিতে গেলে বুয়েট শিক্ষার্থীদের হাতে উভয়ে লাঞ্ছিত হন।

বুয়েটের সিএসই-এর চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাহাদ ইশরাক বাংলানিউজকে বলেন, ইমরান নামে কাউকে আটক করা হয়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখুন, এমন কাউকে আমরা নিয়ে এসেছি কিনা।

জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবদুর রহিমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আবদুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তদন্ত করছি। সবার সঙ্গে কথা বলছি। দ্রুত সময়ে প্রতিবেদন দেবো।

তদন্ত কমিটি গঠন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অগ্রগতি থাকলেও বুয়েটের তেমন অগ্রগতি নেই বলে জানা যায়। ঘটনার পর থেকে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা টানা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় সোমবার (৩০ অক্টোবর)।

বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, সেদিনের ঘটনায় মূল তদন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি।

এদিকে এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নানা তথ্য ছড়াচ্ছে।  অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করা হচ্ছে।

ঢাবি শিক্ষার্থীরা বলছেন, অপরাধী যেই হোক নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

গত সোমবার (৩০ অক্টোবর) বুয়েট শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে আট দফা দাবি জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করতে দেখা গেছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েট ক্যাম্পাস দিয়ে পলাশী-বকশিবাজার রাস্তায় সব ধরনের বহিরাগত চলাচল বন্ধ; বহিরাগতদের ক্যাম্পাসের প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ; বুয়েটের শহীদ মিনার সংলগ্ন ফুট ওভার ব্রিজটি অপসারণ; সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করা; সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সংবাদ সম্মেলন করা।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, বুয়েটও করেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কারা জড়িত আমরা বের করবো, বুয়েটের কারা জড়িত তারা বের করবে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখনও নিশ্চিত না কী কারণে ঝামেলা হয়েছে। ঢাবি প্রশাসন এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
এসকেবি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।