জানা যায়, এইচএসসির টেস্ট পরীক্ষার আগে এবার শিক্ষার্থীদের অনেকেই শিক্ষকদের কাছে কোচিংয়ে পড়েনি। কোচিংয়ে না-পড়া এসব শিক্ষার্থীকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা ইচ্ছা করে ফেল করিয়ে দিয়েছেন।
ফেল করা এক শিক্ষার্থী জানায়, পরীক্ষার ফলাফল বের হবার পর আবার বাবা কলেজে এসেছিলেন। আমি পাঁচ বিষয়ে ফেল করেছি। অথচ আমি সব পরীক্ষাই ভালো দিয়েছি। আমার বাবা পরীক্ষার খাতা দেখতে চাইলে অধ্যক্ষ তাকে জানান, আমি নাকি পড়ালেখা করি না তাই ফেল করেছি। আমার বাবাকে তাকে পরীক্ষার খাতা দেখতে চাওয়ার কথা বললে অধ্যক্ষ বলেন, ‘পরীক্ষার খাতা দেখানো যাবে না’। পরে আমার কাছ থেকে প্রতি বিষয়ের জন্য ৪০ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
এদিকে একই অভিযোগ করেছে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থীও। তাদের অভিভাবকদেরও পরীক্ষার খাতা দেখতে দেয়া হয়নি। কলেজ থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে, খাতা হারিয়ে গেছে। যদিও পরবর্তী পরীক্ষার আগে খাতাগুলো কলেজে সংরক্ষণ করার কথা।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকরা এভাবে শিক্ষার্থীদের ঢালাও দোষ দিতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের এরকম ফল বিপর্যয় কেন হলো তা জানা দরকার। আমাদের প্রশ্ন, আসলেই কি আমাদের সন্তানদের কোচিংয়ে না পড়ার কারণেই ফেল করানো হয়েছে? যদি তা না হয় তাহলে খাতা দেখতে দেয়া হচ্ছে না কেন? আবার খাতা হারিয়ে যাওয়ার অজুহাতই বা দেয়া হচ্ছে কেন?
অভিভাবকরা জানান, তারা অনেকেই খাতা দেখতে চেয়েছেন কিন্তু একেক সময় একেক অজুহাতে খাতা দেখতে দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। বোর্ড পরীক্ষায় ফেল করলেও চ্যালেঞ্জ করে খাতা দেখার সুযোগ থাকে। এখানে কেন নেই এ প্রশ্ন করছেন অনেকেই। তবে সন্তান ও পোষ্যদের পরীক্ষার কথা ও কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়ার কথা ভেবে অসহায় অভিভাবকদের কেউ আর এ ব্যাপারে তেমন বাড়াবাড়ি করেননি।
অভিযোগের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করেন নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বেদৌরা বিনতে হাবিবা পরী। কোচিং-বাণিজ্যের অভিযোগটিকে পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি যোগদানের পরে সব শিক্ষককে সতর্ক করে দিয়েছি কলেজ চলাকালে কোনো ধরনের কোচিং করানো যাবে না। আর যেসকল শিক্ষার্থী ফেল করেছে, তারা তো ঠিকমতো লেখাপড়াই করে না। অনেকে তো কলেজে ঠিকমতো আসেও না। মূল্যায়ন পরীক্ষাতেও অনেকে ফেল করেছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রেজাউল বারী জানান, আমরা এ ব্যাপারে অবগত নই। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেননি। খাতা দেখতে চাইলে অবশ্যই দেখতে দেয়া উচিত। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৭
জেএম