ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এমপিও-এর জন্য জান-প্রাণে চেষ্টা করছি: শিক্ষামন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
এমপিও-এর জন্য জান-প্রাণে চেষ্টা করছি: শিক্ষামন্ত্রী নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিং করছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: শিক্ষকদের এমপিও বা মাসিক বেতন-ভাতার সরকারি অংশের জন্য মন্ত্রণালয়ও জান-প্রাণে লড়াই করে যাচ্ছে দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আন্দোলনরত শিক্ষকদের শীতের মধ্যে কষ্ট না করে ঘরে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সারা দেশের স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) টানা পঞ্চমদিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এরমধ্যেই এ আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

 

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।

জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে শনিবার সচিবালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানকে যখন অনুমোদন দিই তখন এমপিও দেওয়ার ক্ষমতা থাকে না। এমপিও না দেওয়ার শর্তে অনুমোদন দেওয়া হয়। তারা লিখে দেন আমরা চাই এমপিও না। পরবর্তীতে বাস্তবে এটি টিকে না, আপনাদের মন জয় করে ফেলেছে, আমার মন জয় করে ফেলেছে।
 
১৯৮০ সাল থেকে ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করার মধ্য দিয়ে এ পদ্ধতি চালু হয় জানিয়ে তিনি বলেন, পরবর্তীতে বেড়ে তা শতভাগ হয়েছে।   

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাফিলতির কারণে এমপিও হচ্ছে না- শিক্ষকদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, আমরা চাই সব শিক্ষকেরা বেতন পান। এজন্য কী পরিমাণ তৎপরতা চালাতে হয়, অর্থ লাগে। সেই অর্থ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়, সরকার। এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো গাফিলতি নেই।  

এমপিওভুক্তির জন্য প্রতিবছর বাজেট নিয়ে সংসদে বাহাস হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেটে পাস না করে দিলে আমরা টাকাটা পাবো না। কারণ হলো এটা একটা পদ, এটা স্থায়ীভাবে সৃষ্টি হবে। যদি অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা দেয় এবং আইন মন্ত্রণালয় মনে করে আইন সঙ্গত, তখন আমরা বাজেটে পাবো। তারা মোটেই জিনিসটা খোঁজ রাখেন না। যাদের কাছে পাওয়ার কথা তারা চাপবোধ করেন না, মনে করেন আমরাই দায়ী।  

‘আমাদের সদস্যরা সমস্যায় আছে, আমরা তাদের পক্ষে আছি। এই ম্যাসেজটা তারা নিজেরাই গ্রহণ করতে পারেন না। তারা যদি শুধু আমাদের উপর চাপ দেন…। আমরা জানে-প্রাণে চেষ্টা করতেছি। ’
 
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমরা একবার দিয়েছি, তখন নতুন সরকার, ২০১০ সালে। আমিও না বুঝে দিয়ে দিয়েছি, সরকারকে শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করে নিতে হয়েছে। এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।  

‘আমাদের শিক্ষকদের বোঝা উচিত আমরা তাদের জন্য লড়াই করতেছি। অর্থমন্ত্রীকে কনভিন্স করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীকে নীতিমালা করে দিতে বলেছি। তিনি রাজি হয়েছেন। অর্থ প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে কমিটি হয়েছে। নীতিমালা তৈরি করবেন। আমরা গাফিলতি করে দিচ্ছি না, বিষয়টা মোটেই ঠিক না,’ যোগ করেন নাহিদ।

এমপিও দেওয়ার জন্য প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরাও অনুভব করি। আমাদের নিজেদের পরিবারের সদস্য, ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে না, শিক্ষককেরা সমস্যার মধ্যে আছেন।

‘আমি এখনই জোর দাবি করছি, বেশি করে টাকা দেন যেন তাড়াতাড়ি দিতে পারি এমপিও। কিন্তু আমি চাইলেই তো হবে না। সংসদে বলেও পারছি না। তাই চেষ্টা করে অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের মত নিয়েছি, এটা যদি কার্যকর হয় তাহলে এমপিও-এর একটা সম্ভাবনা আছে। ’
 
শিক্ষকদের অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি আমাদের (শিক্ষক) আবেদন জানাবো, আপনারা কষ্ট করে শীতের মধ্যে না খেয়ে এ রকমভাবে খাকছেন। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। লাভ হলে আমরাও করতাম। আমরাও তো তার চেয়ে কম করি না, তার চেয়ে বেশি করি। তারা মাঝে মাঝে এসে করেন। আমাদের প্রতিদিন করতে হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে জানিয়ে নাহিদ বলেন, যদি অর্থ মন্ত্রণালয় বা সার্বিকভাবে সরকারের আর্থিক সঙ্গতি হয়, আমাদের অর্থ দেয় তবে আমরা তাৎক্ষণিক দিতে পারবো। আমরা তৈরি আছি।

এ সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, বাজেটের আগে আমরা কয়েকটি দাবি করেছিলাম তার মধ্যে এমপিও একটা। বহুবার আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া হয়েছে।  

‘সভায় বারবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সংসদ সদস্যরাও এসে আমাদের বলেন। বাজেটে বরাদ্দ না দিলে কোনো মতে সম্ভব নয়। শিক্ষকরা এমপিও না পেলে সেটি আমাদের জন্যই কষ্টের। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
এমআইএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।