বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এস এম আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেন।
রেজিস্টার অফিস সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৪ জুলাই) রাত থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বাকি বিল্লাহ বিকুল ও ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসাইন আজাদের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ের কথোপকথনের চারটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়।
বিষয়টি আমলে নিয়ে ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল হক ও ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম। কমিটির সদস্যদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১২ জুলাই ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ফারজানা নামে এক প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন।
অডিও সূত্রে জানা যায়, ড. বাকি বিল্লাহ বিকুল ও ড. শাহাদাৎ আজাদ ফারজানা নামের ওই প্রার্থী ও তার স্বামীর সঙ্গে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতিহাস বিভাগে চাকরি দেওয়ার চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী ফারজানা ১০ লাখ টাকা নগদ ও ১০ লাখ টাকার চেক ড. বিকুল ও ড. আজাদকে দেন।
১২ জুলাই ওই বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা শেষে ফারজানার অবস্থান ১৫ তম হয়। ফলে সিন্ডিকেটের আগেরদিন (১৩ জুলাই) ফারজানা বুঝতে পারেন যে, তার চাকরি হবে না। এসময় তিনি ড. বাকি বিল্লাহ বিকুল এবং ড. আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
ড. আজাদ ও ড. বাকি বিল্লাহ বিকুল নিয়োগ না দিতে পারার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করে টাকা ফেরত নিতে বলেন। তবে ফারজানা বলেন, ‘আমি টাকা চাই না, চাকরি চাই’। এসময় ড. আজাদ ইতিহাস বিভাগে খুব শিগগিরই শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে তাকে আশ্বস্ত করেন। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পাওয়ার ১৫ দিনের মাথায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করার কথাও বলেন। পরে ফারজানার স্বামীর সঙ্গে কথা বলে ড. বিকুল ও ড. আজাদ টাকা ফেরত দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্যের কথোপকথন নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রার্থী ফারজানা ও তার স্বামীর সঙ্গে ড. বাকি বিল্লাহ বিকুল ও ড. শাহাদাত হোসাইন আজাদের নিয়োগ বাণিজ্যের কথোপকথনটি বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বাকি বিল্লাহ বিকুলের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। অডিও ক্লিপটি পর্যবেক্ষণ করে যদি নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমি সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো। ’
উল্লেখ্য এর আগে গত বছরের ২ এপ্রিল ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. রুহুল আমিনের নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এর কিছুদিন পর ১৮ সেপ্টেম্বর ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নিয়োগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৮
আরএ