এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
উচ্চ মাধ্যমিকে এবার সারাদেশে গড় পাসের হার ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
প্রায় ৩৪ শতাংশ ফেল করায় সামনে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে- জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সবাইকেই পাস করাতে হবে, একটা সময় আসুক যেন সবাই পাস করে যায়। কিন্তু সেই অবস্থাটা আমাদের এখনও হয় নাই। আগে সময় ছিল যেখানে ৪৯-৫০ শতাংশ পাস করেছে। এটা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন বেশি পাস করেছে সবাই বিষ্মিত হযেছেন, আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি বেশি পাস করাই দিতেছি এজন্য। বেশি পাস করলে আমাদের অপরাধ, কম পাস করলেও অপরাধ।
নাহিদ বলেন, আমাদের জন্য খুব একটা বড় চাপ (সবাইকে পাস করানো)। আমরা ভালো করে দেখে এগুলোর কারণ বের করার চেষ্টা করবো।
পাসের হার বৃদ্ধিতে প্রকল্পের মাধ্যমে ইংরেজি ও গণিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে ক্লাস নেওয়ার কথাও এ সময় জানান মন্ত্রী।
গত বছরের তুলনায় কুমিল্লায় ১৫ শতাংশ বেশি এবং যশোর এবং সিলেট বোর্ডে পাসের হার কমে যাওয়া নিয়ে নাহিদ বলেন, যা বাস্তব তা ফল বেরিয়ে এসেছে। কেউ কেউ বলতেন আমরা নম্বর বাড়িয়ে দিতে বলি, আমরা বাড়িয়ে দিতে বলি না, কমিয়ে দিতেও বলি না। আমরা সবাইকে বাধ্য করতেছি সব শিক্ষক সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেন।
‘আমরা এগুলো দেখবো, ওই বোর্ডগুলোও নিজেরা বিশ্লেষণ করে দেখবেন, কেন কুমিল্লা বোর্ডের ভালো হলো, সিলেট ও যশোরে কেন খারাপ হলো? আমরা দেখে ত্রুটি বের করবো এবং সমাধান করবো। ’
মানবিকের ফল বিপর্যয় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যারা তুলনামূলক মেধাবী তারা বিজ্ঞানে ভর্তি হচ্ছেন। এটা একটা বিষয় বটে। তাদের প্রতি জোর দিচ্ছি এ কারণে, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশ দিয়েছিলেন, আমাদের জাতিরও সেটা আকাঙ্খা হবে যে ভবিষতের ছেলে-মেয়েরা সেই শিক্ষা লাভ করুক যে শিক্ষাটা বাস্তব কর্মজীবনে প্রয়োগ করা যাবে। সেটা করতে গেলে বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাইন্ড অতি জরুরি। সেজন্য ওই দিকে জোর দেওয়াটা যুক্তিযুক্ত।
‘পাশাপাশি অন্য বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ, ওখান থেকেও ভালো ছাত্র বের করে নিয়ে আসতে হবে, সেটা আমরা গুরুত্ব দেবো...। ’
সামগ্রিক ফলাফল সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এখন মান বৃদ্ধির দিকে জোর দিচ্ছি। সেটা আমাদের কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ না। আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছি, যেখানে মান বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে, আমরা দিচ্ছি। মান বৃদ্ধি পাচ্ছেও। এবার গণিত অলিম্পিয়াডে দু’জন গোল্প মেডেল পেয়েছে। এটা একটা অবিশ্বাসী সাফল্য। অনেক দেশকে পেছনে ফেলে গোল্ড মেডেল নিয়ে এসেছে।
‘অনেকে হয়তো বলেন, ভাবটা এমন যারা আযোজন করেন, যেন তারাই এসব তৈরি করেছেন! এটা তো আমাদের শিক্ষকরাই পড়াইছেন, আমাদের শিক্ষার্থীরাই হয়েছেন। সবাই সমান মেধাবী হবে না। ’
তিনি বলেন, আমরা গুণগত মান বাড়িয়ে এমন জায়গায় যাবো যাতে সবাই এই শিক্ষাটা অর্জন করে পাস করে একটা যোগ্য স্থানে যায়। তার মধ্যে অনেক মেধাবী যারা, সৃজনশীল যারা, কিছু করতে পারে যারা, তাদের জন্য আমাদের উন্মুক্ত করতে হবে।
শূন্যভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিবারই ব্যবস্থা নেই। ত্রুটিগুলো বের করে ভালো করার উদ্দেশে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মাহাবুবুর রহমান, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
এমআইএইচ/আরবি/