ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘তারা কোন শিক্ষক’, জানতে চান শিক্ষামন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২০
‘তারা কোন শিক্ষক’, জানতে চান শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা: কারিগরি শাখায় পড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ‘জীবন নষ্ট করছেন’- এমন মন্তব্য করা সরকারি শিক্ষকদের নামের তালিকা চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
 
সাধারণ শিক্ষায় সনদধারীদের কর্মসংস্থান না হওয়ায় উদ্যোক্তা হতে, কর্মসংস্থান তৈরিতে কারিগরি শিক্ষায় সবার মনোযোগে জোর দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।


 
সোমবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ইরাব) আয়োজনে ‘কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা: এসডিজি অর্জনে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল সেমিনারে একথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
 
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খাঁন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোরাদ হোসেন মোল্লা।
 
২০২২ সালে মাধ্যমিকে কারিগরির দু’টি ট্রেড চালু করা হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার হার আরও বাড়বে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে আধুনিক মানের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে। এ কারণে সাধারণ শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষায়ও আমরা কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে তুলছি। নবম-দশম শ্রেণিতে অন্তত দু’টি ট্রেড বাধ্যতামূলক করার ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করছি ২০২২ সালে সবস্থানে চালু করতে পারবো।
 
কারিগরির প্রসারে মান উন্নয়ন প্রয়োজন উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের দীর্ঘদিন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। সেই নিয়োগ দেওয়ার বড় উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। মানসম্মত ল্যাব, ইক্যুপমেন্ট এগুলো থাকতে হবে, ই-ইন্ডাস্ট্রিজ একাডেমির লিংকেজ খুব জরুরি।
 
মন্ত্রী আরও বলেন, যখন এমপিওভুক্তি করছি তখন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিচ্ছেন, এখন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করলে অনুমোদন নিয়ে স্থাপন করতে হবে। প্রায়শই দেখা যায়, যত্রতত্র যেকোনোভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করে ফেলেন। নানানভাবে চাপ প্রয়োগ করেন অনুমোদন দেওয়া হোক। গত কয়েকবছর শর্তসাপেক্ষে বলা হচ্ছে, আর কেউ এমপিওভুক্তি চাইবে না। কিন্তু সবাই এমপিও চায়। সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বহুগুণ বেড়েছে। কিন্তু তারপরেও যদি প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে থাকে তবে সরকারের একমোডেট করার সাধ্য কতোটুকু আছে সেটাও বুঝতে হবে।
 
শিক্ষামন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কারিগরির অনেক সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নাকি বলেন, তারা শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট করছেন। আমি জানতে চাই তারা কোন শিক্ষক। আর কারিগরির শিক্ষকরা এটা কী করে বলেন? কারণ কারিগরির কোন শিক্ষার্থী বেকার থাকছে? তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বরং যারা অন্য শিক্ষায় আছে সনদধারী হয়েও তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। আমাদের এদিকেও মনোযোগ দিতে হবে। সবাইকে চাকরি খুঁজলে হবে না। উদ্যোক্তা হবে, অনেককেই নিজের কর্মসংস্থান নিজেকেই সৃষ্টি করতে হবে। কাজেই সেই মনোভাবটিও আমাদের গড়তে হবে।
  
ইবতেদায়ি শিক্ষকদের বিষয়টি আমরা অবগত আছি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। তিনি সম্মতি দিয়েছেন। এটি নিয়ে কাজ চলমান। খুব শিগগিরই তাদের এমপিওভুক্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এমপিও নীতিমালা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অবশ্যই ইবতেদায়ি মাদ্রাসার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
  
কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিবছর ২৩-২৮ লাখ লোক শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছে।  
 
মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ ও মাদ্রাসায় বাণিজ্য বিভাগ চালু করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
 
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মমতাজী, টেকনিক্যাল এডুকেশন কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ, কারিগরি শিক্ষা কল্যাণ সমিতির সভাপতি নাজমুল ইসলাম, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা জয়নুল আবেদিন জিহাদি।
 
ইরাব সভাপতি মোসতাক আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হকের সঞ্চালনায় সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাব্বির নেওয়াজ খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ শরিফুল আলম সুমন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২০
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।