ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইউজিসির শুনানি কার্যক্রম বে-আইনি: রাবি উপাচার্য

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০
ইউজিসির শুনানি কার্যক্রম বে-আইনি: রাবি উপাচার্য

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের উন্মুক্ত শুনানি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ শুনানি কার্যক্রম বে-আইনি, আদালত অবমাননা এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান।

 

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ কাছে লেখা এক চিঠিতে এ অভিযোগ তোলেন তিনি।

চিঠিতে উপাচার্য আব্দুস সোবহান লেখেন, উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কোনো ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে দেওয়া হয় নাই। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্যের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে আপনার নির্দেশে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একজন সিনিয়র সহকারী পরিচালক এবং উপাচার্যের সমমর্যাদা সম্পন্ন দুইজন সদস্য সমন্বয়ে বর্ণিত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে যা আইনসিদ্ধ নয়।

আইন অনুযায়ী তদন্ত কমিটির সদস্যদের মর্যাদা উপাচার্যের মর্যাদার এক ধাপ উপরে হওয়া বাঞ্ছনীয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য কর্তৃক উপাচার্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত তাই শুধুমাত্র নিয়োগকর্তা দ্বারা সম্পন্ন করা আইনসিদ্ধ। কিন্তু আইন বহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক একজন সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও উপাচার্যের সমমর্যাদা সম্পন্ন দুইজন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি কর্তৃক তদন্তকার্য পরিচালনা শুধু বে-আইনিই নয় বরং এর মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকেও খর্ব করা হয়েছে।

চিঠিতে তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে বিচারাধীন আছে। একই বিষয় নিয়ে তাই তদন্ত বা প্রশ্ন উত্থাপন করা আদালত অবমাননার সামিলও বটে। উপাচার্য তার ওই চিঠিতে তদন্ত কমিটির প্রধানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও উত্থাপন করেছেন।

উপাচার্যের দাবি, তদন্তের আগে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক গণমাধ্যমে বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা থেকে প্রতিয়মান হয় যে, তদন্তের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল সম্পন্ন করা হয়েছে। যারা একজন উপাচার্যকে নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অপদস্থ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ইউজিসির তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক দিল আফরোজ বাংলানিউজকে বলেন, নিরপেক্ষভাবে তদন্ত কাজ করা হচ্ছে। পক্ষপাতমূলক কোনো কাজ কমিটির কোনো সদস্যই করেনি। আমরা উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে আদিষ্ট হয়ে অভিযোগ তদন্ত করছি। বরং উপাচার্য ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বিষয়টি জটিল করে তুলেছেন।

এর আগে, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি রাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও ইউজিসিতে দাখিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের একাংশ। এতে মোট ১৭টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়। এ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ইউজিসি আগামী ১৭ ও ১৯ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত শুনানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২০
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।