ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

আইডিয়াল স্কুলে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিনাবেতনে পড়ার দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২০
আইডিয়াল স্কুলে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিনাবেতনে পড়ার দাবি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ/ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে করোনা ভাইরাসের সময় অধিকতর ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের ফুল ফ্রি বা বিনাবেতনে পড়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরাম।

রোববার (৪ অক্টোবর) আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিমউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রোস্তম আলী এক স্মারকলিপিতে স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি ও অধ্যক্ষকে এ দাবি জানান।

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিল, বনশ্রী, মুগদা এ তিন শাখায় অধ্যয়নরত ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষে বলা হয়, করোনা ভাইরাস মহামারিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের নিরাপত্তায় সাড়ে ৭ মাস যাবত শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শ্রেণিতে সামনা-সামনি পাঠদান হচ্ছে না। অনলাইন পাঠদান গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। অনলাইনে পাঠদানে কেবল ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। শিক্ষকরা অনলাইন পাঠদানে যথাযথ অভিজ্ঞ নয় বিধায় শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিচ্ছে না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা করোনাকালে অবরুদ্ধ রয়েছে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, মহামারিতে এ স্কুলে অধ্যয়নরত ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর প্রায় ৬০ শতাংশ অভিভাবক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ৬০ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত। তারা খারাপ অবস্থায় আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই বাড়িভাড়া দিতে না পেরে সন্তান ও পরিবার নিয়ে গ্রামে চলে গেছেন। কারো ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ চাকরি হারিয়েছেন। অনেকে আর শহরে ফিরে আসবেন না। কারো কারো লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন ফি আদায়ে শ্রেণিশিক্ষকরা বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে আসছে উল্লেখ করে বলা হয়, টিউশন ফি না দিলে নাম কেটে দেওয়া, ওপরের শ্রেণিতে না তোলা, অনলাইনে ক্লাস না করতে দেওয়াসহ নানাবিধ ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। তিন মাসের অগ্রিম টিউশন ফি আদায় করা হচ্ছে। কোনো বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুলে অগ্রিম বেতন আদায় করার নিয়ম নেই। এমনকি রাতদিন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বারবার ফোন করে বেতন দিতে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। এটি অমানবিক ও দুঃখজনক। করোনাকালে বিগত সাত মাস যাবত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মানবেতার জীবনযাপন করে আসছে। অথচ এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি।

স্কুলটি বন্ধ থাকায় প্রতিদিনের অনেক খরচ কমেছে। স্কুলের ফান্ডে কোটি কোটি টাকা রয়েছে। এখানে আট শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। অধ্যক্ষ প্রায় আড়াই লাখ টাকা মাসিক বেতন ভাতা নিচ্ছেন। বিনাবিভাড়ায় স্কুল ভবনে ফ্রি থাকছেন। শিক্ষকরা বিভিন্ন খাত সৃষ্টি করে বিভিন্ন ভাতা নিচ্ছেন। গভর্নিং বডির সদস্যরা ঈদ বোনাস নিচ্ছেন। এ স্কুলে শতাধিক শিক্ষক গভর্নিং বডির সহায়তায় অনলাইনে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ শিক্ষকরা বিগত জুলাই মাসে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন কোচিং বাণিজ্য করবেন না। স্কুলে তিনটি ক্যাম্পাসে অনেক সেকশন অনুমোদন নাই। সরকারি নিয়ম বহির্ভূত এমপিওভুক্ত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। অতিরিক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে অভিভাবকরা বাধ্য নয়। স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করা প্রয়োজন। টিউশন ফি সরকারি নিয়ম অন্যায়ী পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য ফুল ফ্রি/হাফ ফ্রির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আইডিয়াল স্কুলে করোনাকালে এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং বিভিন্ন কৌশলে টিউশন ফি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

অভিভাবক নেতারা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যয়নরত ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনাকালে অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাদে বিনাবেতনে অথবা অর্ধবেতনে পড়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২০
এমআইএইচ/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।