ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসির ফল প্রকাশের বিল পাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসির ফল প্রকাশের বিল পাস ...

ঢাকা: বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানশ্রেণির ফল পরীক্ষা ছাড়াই প্রকাশ করতে আইন সংশোধন করে জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হয়েছে। গেজেট প্রকাশের জন্য দুই দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) সংসদের অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী উপস্থাপিত এই বিল এক দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

এইচএসসির পাশাপাশি সমমানের পরীক্ষার জন্য আরও দুইটি বিল পাস করা হয় সংসদে। রোববার পাস হওয়া অন্য দুটি বিল হচ্ছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ ও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ বিল।
 
সংসদে বিলটি উপস্থাপনের সময় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আমাদের প্রস্তুত রয়েছে। বিদ্যমান আইনে যেহেতু রয়েছে পরীক্ষা পূর্বক ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে আমরা এবার পরীক্ষা নিতে পারিনি। বিশেষ পদ্ধতিতে ফলাফল দিতে চাচ্ছি। এজন্য আইনটি সংশোধন প্রয়োজন। মহান সংসদ থেকে আইনটি পাস করে দিলেই দ্রুততার সঙ্গে আমরা ফলাফলপ্রকাশ করতে পারব।

বিলটির উপর জনমত যাচাই বাছাইয়ের এবং সংশোধনী প্রস্তাব দেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। জনমত যাচাই বাছাইয়ের আলোচনায় তারাঅটো পাসের সমালোচনা করেন। সরকার চেষ্টা করলে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হতো বলেও তারা মত দেন। পরে বিলটি ভোটে দিলে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়।

১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গত বছর ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইস পরিস্থিতির কারণে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সরকার পরীক্ষা ছাড়াই মূল্যায়নের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমান শ্রেণির ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে জেএসসি এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে এইচএসসির ফল নির্ধারণ করার ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু পরীক্ষা ছাড়া ফল প্রকাশে আইনগত জটিলতা নিরসনে সরকার আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয় এবং মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর সংসদে তা তোলা হলো।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিমারি, মহামারি, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃক সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নিয়ে ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশাবলি জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

রোববার বিলটি পাসের প্রস্তাব করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সব কিছু প্রস্তুত আছে। জেএসসি এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে ফলাফল প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এখন বিলটি পাস হলে ফলাফল দুই তিন দিনের মধ্যে প্রকাশ করা সম্ভব হবে। দেরি হওয়ার কোনো কারণ নেই।

ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল তৈরি করে বিল তিনটি অর্ডিনেন্স আকারে পাসকরে সঙ্গে সঙ্গে ফল প্রকাশের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ছিলো। কিন্তু যেহেতু ১৮ জানুয়ারি সংসদ বসছে তার কারণে অর্ডিনেন্স আকারে পাস না করে বিল আকারে উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিলটি পাস হয়ে গেলে গেজেট প্রকাশের জন্য দুইদিনের মত সময় লাগবে। তারপরেইআমরা ফলাফল প্রকাশ করতে পারবো। কাজেই এটি নিয়ে দেরি করার কোনো সুযোগ নেই।
 
 বাংলাদেশ সময় ১২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
এসকে/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।