ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বাল্যবিয়ের পরও স্কুলে ওরা...

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
বাল্যবিয়ের পরও স্কুলে ওরা...

টাঙ্গাইল: করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সময়ে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শেখ ফজিলাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাফিয়া, রেমি খানম, সুমি আক্তার মৌটুসি, মোহনা আক্তার, মিতু আক্তার, রিয়া আক্তার ও দশম শ্রেণির ছাত্রী মোর্শেদা খাতুন, সানিয়া আক্তার ও লোপা আক্তার। বিয়ের পরও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে ওরা স্কুলে এসেছে।

তবে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় দশম শ্রেণির ছাত্রী লোপা আক্তারের সঙ্গে। সে জানায়, তার বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশেই সংগ্রামপুর গ্রামে। বাবা সেলিম রাজমিস্ত্রির কাজ করেন, মা শাহিনা আক্তার গৃহিনী। লোপারা দুই বোন কোন ভাই নেই। ছোট বোন সোনালী স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালযের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। লোপার ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া করে স্বাবলম্বী হওয়ার। নার্সিং পড়ে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চেয়েছিল। কিন্ত করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তার সে ইচ্ছায় ছেদ পড়েছে। বালিকা বধূ সেজে যেতে হয়েছে স্বামীর সংসারে।

লোপা আরো জানায়, তার অমতেই তার বাবা-মা একই উপজেলার চৈথট্র গ্রামে তার বিয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলেও বাবা-মা শুনেনি। আমার পক্ষ হয়ে দাদা ও কাকা প্রতিবাদ করলেও কোন কাজ হয়নি। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়ে শেষ মুহূর্তে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার শর্তে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে।

শুধু লোপা আক্তার নয়, একই শুরে কথা বলেন বাল্যবিয়ে শিকার হওয়া মাফিয়া, রেমি খানম, সুমি আক্তার মৌটুসি, মোহনা আক্তার, মিতু আক্তার, রিয়া আক্তার, মোর্শেদা খাতুন ও সানিয়া আক্তার। মৌটুসি জানায়, ‘সামাজিক প্রেক্ষাপট ও বাবা-মার কারণেই তাদের বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে। আমি পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চাই স্বামীর সংসার থেকে এখনো বাধা আসেনি। প্রত্যাশা পূরণ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছি। ’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বোরহান উদ্দিন বলেন, বিয়ের পর অনেক মেয়েরই লেখাপড়া বন্ধ করে দেন তাদের পরিবার। নানা বাধার কারণে তাদের বিদ্যালয়ে ফেরানো সম্ভব হয় না। বিয়ের পরও যারা বিদ্যালয়ে এসেছে আমাদের উচিত তাদের উৎসাহিত করা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিউটি বেগম বলেন, বিয়ের পরও তারা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে বিদ্যালয়ে এসেছে এটা ভালো দিক। যা নারী শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখবে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের মনোবল অটুট রাখতে সহযোগিতা করবে। বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক ব্যাধি এটি দূর করতে সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন।

বাংলাদেম সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।