ইবি: মেসে অবস্থানরত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মধ্যরাতে ছাত্র আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা হামলার নেতৃত্বদানকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার জাহিদুল ইসলামের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।
পাশাপাশি এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরূদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলামের পদত্যাগের দাবি জানান।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা এ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও জিয়া মোড় থেকে পৃথক দুটি মিছিল বের করে তারা। মিছিল দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে মিলিত হয়।
শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে রাত দুইটা পর্যন্ত অবস্থান করে স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বক্তব্য প্রদান করেন তারা।
ক্ষার্থীরা বলেন, ‘মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের বন্দী করে হামলা অত্যন্ত অমানবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে। আমরা ঘৃণাভরে এর প্রতিবাদ জানাই। মারধরের পর মেসে অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীরা সাহায্য চেয়ে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে ফোন দেওয়ার পরও সেখানে প্রশাসনের কোনো ভূমিকাই ছিল না। বরং অন্য শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধার ও প্রতিবাদ করতে গেলে তারাও হামলার মুখে পড়ে জীবন নিয়ে ফিরে আসে। এসব ঘটনার দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তাব্যক্তি শিক্ষার্থীদের সাহায্যর্থে এগিয়ে জাননি যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এ ঘটনার মুলহোতা কর্মকর্তা জাহিদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। পাশাপাশি মারধরের সঙ্গে জড়িত স্থানীয়দের ও অন্যদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হবে।
পরে রাত দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন ও সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যান এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্র্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তারা বুধবার ১১টায় শিক্ষার্থীদের এসব দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে বসার আশ্বাস দেন।
তবে শিক্ষার্থীরা জড়িত কর্মকর্তা জাহিদের বহিষ্কার না করা হলে তার ব্যবস্থা নিজেরাই (শিক্ষার্থীরা) করবেন বলে হুঁশিয়ারী দেন। পাশাপাশি তারা জাহিদকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে বুধবার সকাল ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনের মুলতবি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাতের ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী ত্রিবেনী রোডের পাশে রবিউল ইসলাম মেসে ইবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এক শিক্ষার্থী গুরুতরসহ পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০ জন স্থানীয়রা এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১
আরএ