ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দুর্নীতির অভিযোগে আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষের শাস্তি দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২২
দুর্নীতির অভিযোগে আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষের শাস্তি দাবি

ঢাকা: রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জসিম উদ্দীন আহমেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে কঠোর শাস্তি দাবি এবং অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে ওই কলেজের সাধারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

শুক্রবার (৩ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল-হামিদ মিলনায়তনে ভুয়া পিএইচডিধারী, অঢেল আর্থিক দুর্নীতি ও ব্যাপক অন্যায়-অনিয়মে জড়িত থাকা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জসিম উদ্দীন আহমেদ ও তার দোসর কতিপয় অসাধু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

 

জানা গেছে, প্রফেসর জসিম উদ্দীন আহমেদ ২০১৭ সালের মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।  
যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।  

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, গভর্নিং বর্ডির যোগসাজেশে অনৈতিকভাবে চারজন শিক্ষককে প্রায় দুই বছর চাকরি করার পরও ২০১৭ সালে প্রবেশনারি দেখিয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। একাধিক কর্মচারীকে চাপ প্রয়োগ করে চাকরি হতে অব্যহতি নিতে বাধ্য করেন।

এছাড়াও শিক্ষার্থীদের লেনদেনের জন্য প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার পরেও ২০২২ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং-এর একটি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেন।  

অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের পোশাক বাণিজ্য করে ৫০-৬০ লাখ টাকা আদায় করে ভাগ বাটোয়ারা করা, রিটেক পরীক্ষা, জরিমানা, পুনঃভর্তি,  কলেজ হোস্টেলের টাকা আত্মসাৎ ও শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগ করেন তারা।  

জানা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় রসিদ ব্যতীত অর্থ আদায় এবং ব্যাবহারিক পরীক্ষা দিতে আগত শিক্ষার্থীদের থেকে ভালো নাম্বার পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তার সুনজরে থাকা অফিস সহকারীদের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ আদায় করেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, রাজধানীর লিংকনস হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে  আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ এবং তার সহযোগী মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী ভুয়া ডক্টরেট ডিগ্রির সার্টিফিকেট ক্রয় করে তা কলেজে জমা দিয়ে পদোন্নতি ও আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। এসব অনৈতিক কাজ তারা অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির সহায়তা নিয়েই করেছেন।

কলেজটির বাংলা বিভাগের অধাপক মিয়ারুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রীকে পদোন্নতি দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন তৌফিক আজিজ চৌধুরী। পরে আমি প্রিন্সিপাল বরাবর তাৎক্ষণিক অভিযোগ করলে তোফিক সাহেব আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে লাঞ্চিত করেন।  

কলেজের আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক মারুফ নেওয়াজ বলেন, অধ্যক্ষ এবং তার অনিয়মের সহযোগী শিক্ষকরা মিলে, গভর্নিং বডির সহায়তায় কলেজে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। গত ১৪ বছর ধরে গভর্নিং কমিটি অনৈতিকভাবে, জোরপূর্বক আমাদের স্বাক্ষর নিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নামে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো একটিও সত্যি নয়। আগামীকাল শনিবার এ বিষয়ে গভর্নিং বডি জরুরি মিটিং ডেকেছে। মিটিং-এর পর এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলবো।

গভর্নিং বডির সভাপতি অ্যাড. রাজিউর রহমানের কাছে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিস্তারিত জেনে পরে কথা বলবেন বলে মোবাইল ফোন কলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষকে কঠোর শাস্তির আওতায় না আনলে আগামীকাল থেকে সকল প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেন সাধারণ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২২ 
এমকে/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।