ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার রাজস্ব ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ৮৬০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে এ বাজেট উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনাকালীন সংকটের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার মুহূর্তেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতি এর নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করছে। কোথাও কোথাও মানবিক বিপর্যয় ঘটছে। এই মুহূর্তে সহনশীলতার সংস্কৃতি চর্চা করা জরুরি। জ্ঞানের বাতিঘর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে পারে। “সকলের সঙ্গে মিত্রতা, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়” জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই আন্তর্জাতিক নীতিদর্শন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনুসরণ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই দর্শন গভীরভাবে সমর্থন করে।
তিনি বলেন, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও দেশ গঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। সুদক্ষ মানব সম্পদ, বিশেষায়িত জ্ঞান ও দূরদর্শী পরিকল্পনা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মশাল বাহক হিসেবে কাজ করে যাবে।
উপাচার্য বলেন, শিক্ষা, গবেষণা এবং অ্যাডভোকেসি কার্যক্রমের মাধ্যমে জেন্ডার সমতা, ন্যায়বিচার, নারীর ক্ষমতায়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণ এবং সমসাময়িক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহিদ শেখ রাসেল ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের নাম ‘শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ’ করার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদন পাওয়ার পর এটি কার্যকর হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস-উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসন ও সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের শতভাগ ভ্যাক্সিনেশন তথা টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ন্যূনতম প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া, সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখার জন্য একাডেমিক কাউন্সিল প্রণীত ক্ষতি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার আলোকে একাডেমিক কার্যাবলি পরিচালিত হচ্ছে। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বিশেষ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আনার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
অধিবেশনে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বক্তব্য রাখেন। উপাচার্যের অভিভাষণ ও কোষাধ্যক্ষের বাজেট বক্তৃতার উপর সিনেট সদস্যগণ আলোচনায় অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
এসকেবি/কেএআর