ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

তিন পুরুষই মানুষ গড়ার কারিগর

এম এম ওমর ফারুক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২২
তিন পুরুষই মানুষ গড়ার কারিগর এস এম জগলুল হায়দার

নড়াইল: বাপ-দাদার পেশাকে বেছে নিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন জাতীয় শিক্ষা পদকপ্রাপ্ত নড়াইলের কালিয়ার শিক্ষক এস এম জগলুল হায়দার তিনিসহ পরিবারের তিন পুরুষ নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছেন মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে।

জগলুল হায়দার উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক এস এম ইমাদ উদ্দিনের ছেলে।

বর্তমানে তিনি পশ্চিম কলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

শিশু শিক্ষার্থীদের ঝড়েপড়া রোধে বিশেষ ভূমিকাসহ শতভাগ সফলতা অর্জন করায় ২০১৩ সালে নড়াইল জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হন তিনি। চলতি বছর জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় কালিয়া উপজেলা ও নড়াইল জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় উপজেলা ও জেলায় বিজয়ী ঘোষণা করেছে।

জানা যায়, জগলুল হায়দারের দাদা বদর উদ্দিন মাস্টার ব্রিটিশ আমলে নিজের উদ্যোগে বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তুলেছিলেন একটি পাঠশালা। তার সেই পাঠশালা থেকে এলাকার বহু ছেলে-মেয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়েছেন। এ কারণে এলাকায় তিনি ওস্তাদজি হিসেবে পরিচিত।

পরবর্তী সময়ে ওস্তাদজির একমাত্র ছেলে এস এম ইমাদ উদ্দিনও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়ে সারাজীবন জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন। শুধু তাই নয়, ইমাদ উদ্দিনের দুই ছেলে এস এস জুলফিকার ইমরান ও এস এম জগলুল হায়দারও বাপ-দাদার পেশাকে বেছে নিয়েছেন।

এদের মধ্যে জগলুল হায়দার পৈত্রিক পেশায় বেশ খ্যাতিও অর্জন করেছেন। পেশাগত কাজে সাফল্যের কারণে তিনি একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

এ বিষয়ে জগলুল হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, বাপ-দাদার পেশার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতেই ২০০৩ সালে তিনি উপজেলার দুলালগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। নিজের কর্মদক্ষতায় অতি অল্প সময়ের মধ্যে ২০০৬ সালে পদোন্নতি পেয়ে যোগানিয়া খান সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

পুরস্কার প্রাপ্তি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি জানান, শিক্ষা জীবন শেষে দাদা, বাবা ও বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণাকে সামনে রেখে পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকেই বেছে নেন। আর পেশার উন্নতিতে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। সরকারি নির্দেশনার পাশাপাশি নিজের চিন্তা-চেতনাকে কাজে লাগিয়ে এমন সাফল্য পেয়েছেন। একাধিক পুরস্কার প্রাপ্তি তাকে পেশার প্রতি আরও বেশি মনোযোগী করে তুলেছে। বর্তমানে তিনি বিভাগীয় পর্যায়ে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

প্রবীন শিক্ষক এস এম ইমাদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমি যেমন বাবার পেশাকে ধরে রেখেছিলাম, তেমনি আমার সন্তানরাও দাদার পেশা ধরে রেখে খ্যাতি অর্জন করায় গর্বিত। তিন পুরুষ সমাজে শিক্ষার আলো ছড়াতে পেরে নিজেদেরকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।