ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ জুলাই ২০২৪, ০১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবির জনবল বাড়াতে স্থগিতাদেশ, জানেন না রেজিস্ট্রার 

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২২
ইবির জনবল বাড়াতে স্থগিতাদেশ, জানেন না রেজিস্ট্রার 

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নতুন করে ‘জনবল বাড়ানো’ (শিক্ষক, কর্মকর্ত ও কর্মচারী) স্থগিত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।  

সম্প্রতি বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ, সিন্ডিকেটে কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ইউজিসি এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে।

এ সংক্রান্ত তথ্য যাচাইয়ের জন্য ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও করেছে কমিশন। তবে এসবের কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার।  

জানা গেছে ইউজিসি থেকে ছয় সদস্যের কমিটি সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউজিসিতে পাঠানো জনবলের চাহিদার যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই করবে। যাচাই বাছাই শেষে জনবল বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইউজিসি।

একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তার বেতন বৃদ্ধিতে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা সে বিষয়সহ নানা অনিয়ম খতিয়ে দেখবে কমিটি। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) কমিশনের সদস্য ও ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে।

কমিটিতে কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগমকে আহ্বায়ক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মৌলি আজাদকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।  

কমিটির অন্য চার সদস্য হলেন- ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের, সচিব ড. ফেরদৌস জামান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ইউসুফ আলী খান এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অডিট) রবিউল ইসলাম।

অফিস আদেশে বলা হয়েছে, জনবলের চাহিদা যাচাই-বাছাই ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম, বিদ্যমান জনবল ও জনবল সংক্রান্ত আর্থিক নথিপত্র এবং সরকার ও ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত নীতিমালা পর্যালোচনা করে মতামত দেবে।  

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যবেক্ষণ এবং ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে কমিটি জনবল ছাড়করণের বিষয়ে যথা শিগগির সরেজমিন পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষের কাছে মতামত দেবে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ইবি কর্মকর্তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসির অডিট আপত্তি থাকা সত্বেও ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৫তম সিন্ডিকেটে শর্তসাপেক্ষে স্কেল বাড়ানো হয়। ইউজিসির দাবি, ইবি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ‘স্কেল জাম্পিং’ করা হয়ে থাকতে পারে।

যাদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে তাদের কারো বেতন স্কেল অনুযায়ী ৪৩ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। তবে তাদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। স্কেল জাম্পিংয়ের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে।

কমিটির সদস্য ফেরদৌস জামান বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি বেতন স্কেল ভায়োলেশন করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অতিরিক্ত স্কেল পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রত্যেককে একেকটা করে অধিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছে।  

এছাড়াও অনেকদিন ধরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়েও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনবল দেওয়া স্থগিত আছে। এসব নিয়েই মাসের শেষের দিকে একটা পরিদর্শন টিম যাবে। তবে আগে অনুমোদন দেওয়া নিয়োগ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ইবি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির আইনগত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তাদের কাছে কিছু কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি করা হলে সেটি নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। তবে অভিযোগ রয়েছে ইবিতে স্কেল জাম্পিং করা হয়েছে। যার যে স্কেলে বেতন পাওয়ার কথা তারা তার চেয়ে বেশি বেতন পাচ্ছেন।

৯ নভেম্বর এই চিঠি ইস্যু হলেও এখন পর্যন্ত চিঠি হাতে পাননি এবং এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি জানি না। চিঠি এখনো হাতে পাইনি। অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।