ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এমন প্রতিষ্ঠান চাই না যেখানে একজনও পাস করেনি: শিক্ষামন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
এমন প্রতিষ্ঠান চাই না যেখানে একজনও পাস করেনি: শিক্ষামন্ত্রী ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: আমরা কী চাই না আমাদের সব শিক্ষার্থী পাস করবে? সেটাই তো প্রত্যাশা। আমরা এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে আমার সব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হবে- এমনটাই বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

 

এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ নিয়ে সোমবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  

এ বছর শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে- প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতবার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল হয়েছে, সাবজেক্ট ম্যাপিং করলে যেটা হয় আগে পাস করে এসেছে তার ভিত্তিতে হচ্ছে। সেই কারণে শতভাগ ফেল করা সংখ্যা কমে গিয়েছিল। এবার সাবজেক্ট ম্যাপিং মাত্র তিনটিতে হওয়ায় শতভাগ ফেল করার সংখ্যা বেড়েছে।  

‘আমরা প্রতিবারেই ব্যবস্থা নেই, এবারও নেব। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, আমরা চাই কতটা সাপোর্ট দিয়ে কোথায় ঘাটতি আছে এবং সেটা কীভাবে পূরণ করা যায় সেটা করে যেন আমরা সবাইকে নিয়ে আসতে পারি। আমি এমন কোনো প্রতিষ্ঠান চাই না যে প্রতিষ্ঠানে একজনও পাস করেনি। ’ 

জিপিএ-৫ বাড়ার কারণ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, কারণ এবার প্রস্তুতির সময় পেয়েছে। ক্লাস হয়েছে। তারা অনেক বেশি পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে। সে কারণে আমি মনে করি জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে।   

দীপু মনি বলেন, পাসের হার নিয়েও আমরা নানা রকম কথা বলি, আমরা কী চাই না আমাদের সব শিক্ষার্থী পাস করবে। সেটাই তো প্রত্যাশা। আমরা এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে আমার সব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হবে। তার মধ্যে হয়তো মেধার কমবেশি হবে। সবাই পাস করার জায়গায় যাবে- আমরা তেমন একটা জায়গায় যেতে চাই।  

শিক্ষা ঘাটতি পূরণে কী পদক্ষেপ থাকবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতেই শিক্ষা ঘাটতির গ্যাপ আছে। আমাদের এখানেও আছে। তবে করোনার সময়ে আমাদের এখানে বাড়েনি। আমাদের উদ্যোগ ছিল  অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া। অ্যাসাইনমেন্ট করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেরা নিজেই শিখেছে।

তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম জানুয়ারি থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তমে শুরু হয়ে যাচ্ছে। তাদের একদম ভিন্নভাবে শেখার ব্যবস্থা থাকছে। অন্যদের যে গ্যাপ আছে সেগুলো নতুন বছরে শুরু করবো। আমাদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন থাকবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকের প্রশিক্ষণ থাকবে। যাতে সব শিক্ষক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। গণিত পাস করে গণিতের শিক্ষক হতে হবে- এটা ঠিক না। যারা গণিতে পড়েননি তারাও কিন্তু ভালো ক্লাস নেন।  

আসন সংখ্যার সংকট হবে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি গতবারের মতোই হবে। আসন সংকট একেবারেই হবার কারণ নেই। উচ্চ যে সংখ্যক পাস করে তার চেয়ে আসন অনেক বেশি। আসন সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই।  

কাগজের সংকট নিয়ে এক প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিকভাবেই কিছুটা আছে। এখন বই ছাপার মৌসুম, কিছু সংকট আছে। খুব বড় সংকট হবে না। বই যথা সময়ে দিতে পারবো বলে আশা করি।  

চাইলেও বিজ্ঞানে পড়তে পারে না, বিজ্ঞান শিক্ষায় কীভাবে নিয়ে আসা যায়- প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মানবিকে সব সময় শিক্ষার্থী বেশি থাকে। বিজ্ঞান নিয়ে একটা ভীতি কাজ করে। এর একটা কারণ আমাদের উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব। দেখা যায় যে শিক্ষককে খুব বেশি পছন্দ করেন সেই শিক্ষক যে বিষয়ও পছন্দ করেন। নতুন শিক্ষাক্রমে বিভাজন থাকছে না। শিক্ষার্থী বিজ্ঞানে যেতে চাইলে তাকে বিজ্ঞানে পড়তে দেওয়া উচিত। তারপর যদি দেথা যায় সে সেখানে পারছে না তখন বদলাতে পারে। আর মানবিকে পড়লেও যে তথ্যপ্রযুক্তিতে যেতে পারবো না তাও কিন্তু নয়। এখন মানবিকের অনেকেই প্রযুক্তিতে দারুন ভালো করছে।

পাসের হারে সিলেট বোর্ডে কম থাকা নিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন বোর্ডের মধ্যে পাসের হারের তফাৎ হয়। অন্য সময়ের তুলনায় বেশি কম নয়। আমরা খতিয়ে দেখতে পারি কী কী কারণে কম হয়েছে। একটা তো বন্যার কারণে হতে পারে। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থীকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যেতে হয়েছে, আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে হয়েছে। তাদের আবার আমরা বই দিয়েছি। মানসিকভাবে একটা ধকলের মধ্য দিয়ে গেছে। প্রস্তুতির সময় প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।