ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনযোগ্য উপজেলার তথ্য দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ ইসির

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
নির্বাচনযোগ্য উপজেলার তথ্য দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ ইসির

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনেরও আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে কোন উপজেলায় কবে ভোট হয়েছে, কবে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, এসব তথ্য দিতে বলেছে সংস্থাটি।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচন সংসদ নির্বাচনের পরপরই অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় ৪৮৮টি উপজেলা পরিষদের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ৪৫৫টির নির্বাচন যথাযথ সময়ে, পরে বাকিগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ওই বছর ১০ মার্চ প্রথম ধাপে ৮২টি, ১৮ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে ১২৩টি, ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপে ১২২টি, ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে ১০৬টি এবং ১৮ জুন পঞ্চম ধাপে ২২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দেশে বর্তমানে উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।

আরও পড়ুন: উপজেলায়ও আ’লীগের নিরঙ্কুশ জয়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৯৬

আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। আর নির্বাচন করতে হয় মেয়াদ পূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে। এই ক্ষেত্রে আগামী নভেম্বর থেকেই বেশ কিছু উপজেলা পরিষদ সময় গণনা শুরু হবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই শপথও হয়েছে, পাঁচ বা তার বেশি ধাপে। কাজেই কয়েক ধাপেই শেষ হবে উপজেলাগুলোর মেয়াদ। আর সে অনুযায়ী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হবে।

এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ইসির মাঠ কর্মকর্তাদেরও একই তথ্য দিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। এ সংক্রান্ত চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকদেরও।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ এর ১৭(১) (গ) ধারা অনুসারে পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে, ওই মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থেকে আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের শপথ গ্রহণ ও প্রথম সভার তারিখের তথ্য পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে প্রথমবার, ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বার ও ২০০৯ সালে তৃতীয়বার, ২০১৪ সালে চতুর্থবার, ২০১৯ সালে পঞ্চমবার উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচনে ১৪টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও ট্যাব ব্যবহার করা হয়েছিল।

 আরও পড়ুন: মার্চের প্রথম থেকে পাঁচ ধাপে উপজেলায় ভোট

২০১৪ সালে জুন-জুলাই মাসে সাত ধাপে ৪৮৬ উপজেলার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময়কার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফরে গেলে ভারপ্রাপ্ত সিইসির দায়িত্ব পালন করেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক।

পাঁচটি ধাপের নির্বাচন তার তত্ত্বাবধানেই অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন হলেও দলীয় সমর্থনে ভোট হয়। এতে শতাধিক ব্যক্তি সহিংসতায় প্রাণ হারান।

পঞ্চম ধাপের ভোট শেষে ওই বছর ৩১ মার্চ আবদুল মোবারক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ...প্রথম নির্বাচনে বড় বড় দলগুলো দলীয়ভাবে হওয়ার বিরোধিতা করেছে। এখন তারা আবার দলীয়ভাবে নির্বাচন চাচ্ছে। যদি এমনই চেয়ে থাকে, তবে আইনের মধ্যে ব্যবস্থা করলে আরও ভালো হতো। আশা করি, ভবিষ্যতে তারা আইন প্রণয়ন করবে, তারা এ নিয়ে ভাববে। কারণ এতে অনেক হানাহানি হয়, প্রাণহানি হয়। নির্বাচন স্থগিত হলে আবার নির্বাচন করতে হয়।  

তিনি বলেন, যারা জনমত গঠন করেন, আপনারা এ নিয়ে ভাবুন। এবারের নির্বাচন কোনোমতে পার করে দেওয়া হলো। আগামী নির্বাচনে যেন এ নিয়ে বিভ্রান্তি না হয়।

পরে দশম জাতীয় সংসদেই স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে সম্পন্ন করার আইন হয়। ২০১৬ সাল থেকেই স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হয়।   

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩

ইইউডি/আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।